Monday, December 10, 2007

একান্ত ব্যক্তিগত মতামত - সিডার আর ত্রান তহবিল

ব্লগে ত্রান পাঠানোর উদ্যোগের সাথে সেভ দা চিল্ড্রেনের অতি পরিচিত লোগোটা ঝুলতে দেখছি । গত দুইদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টানা কাজ করা হয়েছে । এই গতকাল রাতেও তিনটার সময় এয়ারপোর্ট থেকে কম্বল ইত্যাদি নন ফুড আইটেম রিসিভ করে দুর্গত এলাকায় পাঠানো হলো । সুতরাং , এস এম এস সিস্টেমে কোথায় কি ভাবে ত্রান যাচ্ছে , সেই ত্রান নিয়ে কে কি করবে , কিছুই জানি না। মাত্রই জেনেছি সেভ দা চিল্ড্রেন ( ইউ কে) এর সাথে বাঁধ ভাঙার আওয়াজ মিলিত উদ্যোগে এই কাজটা করছে । ভালো উদ্যোগ । এবং এটা নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়ে গেছে । সত্যি কথা হলো আমার কম্পিউটার জ্ঞান , এস এম এস পাঠানো ইত্যাকার কাজের অপারেশন কস্ট , ওয়াগারা ওয়াগারা কিচ্ছু জানা নেই । সুতরাং গ্রামীন আর সামহোয়ার ইন কি করছে , আমি কিচ্ছু বুঝি নাই । কিন্তু সেভ দা চিল্ড্রেন সম্পর্কে আমি জানি । কি করছে , কি ভাবে করছে এই গুলো আমার জানা । কিছু ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হতে পারে । তাই কিছু ব্যাপারে মানুষের ধারনা পরিষ্কার থাকা দরকার। বাংলাদেশে সেইভ দা চিল্ড্রেন এর ইউ এস এ, ইউ কে , অস্ট্রেলিয়া , সুইডেন এবং ডেনমার্ক কাজ করে । সেভ দা চিল্ড্রেন এলাইএন্স হলো প্রায় ২৯টা দেশের ২৯ টা আলাদা আলাদা সেভ দা চিল্ড্রেন নামক সংস্থা যারা এখন মিলিত ভাবে কিছু "কমন" নীতি এবং এথিক্স মেনে কাজ করে । এর ভিতর উল্লেখিত পাঁচটা মেম্বার সংস্থা বাংলাদেশে কাজ করছে । প্রত্যেকের অফিস আলাদা । অপারেশন আলাদা । ফান্ড আলাদা । তবে , ন্যাচারাল ডিসাস্টারের মত বিশাল ঘটনায় সেভ দা চিল্ড্রেন চারটা অফিসই একসাথে এবং "ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যনেজমেন্ট ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হিসেবে " বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য সংস্থাদের সাথে নিয়ে সমন্বিত এবং সম্মিলিত উদ্যোগে কাজ করে। সিডারের বেলাতেও তাই করছে । এখানে একটা ব্যাপারে নিশ্চিত করা দরকার । সিডারের খবর পাওয়া মাত্র সেভ দা চিল্ড্রেন ৪৮ ঘন্টা আগে থেকেই সম্ভাব্য দুর্গত এলাকা গুলোতে কাজ করতে শুরু করে । আর ফান্ডের জন্য বাংলাদেশের নাগরিকদের এস এম এসের উপর সেভ কোন ভাবেই নির্ভরশীল নয় । ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের জন্য নিজ নিজ সরকার আর রিসোর্স থেকে ফান্ড নিয়ে কাজ করছে সেভ । যারা ডোনেট করতে চান , সেই সব বিদেশী নাগরিক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অন লাইন ডোনেশন ব্যবহার করেন । তবে নীতিগত ভাবে স্বাভাবিক সময়ে ( ন্যাচারাল ডিজাস্টার বাদ দিলে) সেভ যেই দেশে কাজ করে , সেই দেশের নাগরিকদের কাছ থেকে ডোনেশন নেয় না । ( কই এর তেলে কই ভাজা নিষেধ ) সিডারের ক্ষেত্রে যেখানে কোটি কোটি টাকার খাবার , পানি , ওষুধ , কাপড় , কম্বল, ওরস্যালাইন , গৃহ নির্মান সামগ্রী লাগবে , সেখানে এস এম এস এর জন্য কে বসে থাকবে? তবে , এভ্রি বিট হেল্পস । যারা দুই চার টাকা খরচ করে সহজ উপায়ে ঘরে বসেই সাহায্য করতে চায়, তাদের জন্য একটা সুযোগ হয়ত মোবাইল কোম্পানি গুলো ( এবং সামহোয়ার) করছে । মনে রাখবেন , এই সব কোম্পানি হচ্ছে সব "ফর প্রফিট " অর্গানাইজেশন । কিন্তু সেভ বা অন্যান্য এন জি ও - "নন প্রফিট " অর্গানাইজেশন । কাজের ধরন , অপারেশন মোড , লাভ লোকসানের হিসেব --- একটার সাথে আরেকটা মিলবে না কখনো । এই উদ্যোগে সেভ এর ত্রান এবং এদত সংক্রান্ত কাজে এমন কিছু উনিশ বিশ হবে না । আমি যেটা বুঝেছি , নতুন করে কোন সিস্টেম না বানিয়ে সেইভ এর অন লাইন ডোনেশন সিস্টেমটাকে খুব সম্ভত কাজে লাগানো হচ্ছে । খোঁজ নিয়ে জানতে পারলে জানাবো । সবচেয়ে বড় কথা , আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে সাহায্য পৌঁছালেই হলো । একটু আগে ক্যরোলিনা , ইউ এস থেকে খালাত বোন খবর দিলো ওদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরা টাকা উঠাচ্ছে । এই রকম ছোট ছোট ব্যক্তিগত উদ্যোগের মতই একটা উদ্যোগ এই সামহোয়ার -গ্রামীন - সেভ । সিডারে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য সকলের উদ্যোগ সফল হোক ।

জাগরন ক্যাম্পেইনের ঘুমাইয়া যাওয়ার পেইনফুল সমাধান !

দিন কাল খারাপ । যে রাতে মোর দুয়ার গুলি ভাঙলো ঝড়ে গানটা শুনা নিষেধ । যেদিক তাকাই , খালি মন খারাপ করা খবর । তার ভিত্রেই চামে চুমে মুন ভালো করার চিষ্টা কইরা যাইতেছি । সেইটাতে কারু ত্রান মূলক সাহায্য পাওন যাইতেছে না । সকলে মিলিয়া পণ করিয়াছে , আমারে যেমনে পারুক , কান্দাইবো । কি আর করুম। কাম ও আকামে ব্যস্তু আচি । দিন ভইরা রিলিপের গপ মনিটর করি । কার কি লাইগবো , সেইডার যোগাড় যন্ত্র করি। রাত জাইগা পেলেনের থন রিলিপ নামাই । ভুরের বেলা সবাই বাথুরুমে যাওনের আগে বরিশাল পাঠাই । এই তো লাইফ , এক্কেরে জীবন হইয়া গেলো । লাস্ট ৪৮ আওয়ার্স ছিলাম ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট ওয়ার্ক শপে । আপিসে আইসা দেখি , আমার সাধের কফির মাগ ভাঈঙ্গা লাইসে । আর টেবিলে পাহাড় সুমান উঁচা কাম। টেলিফুনে আমারে বিছ্রাইতাছে বেনামী সব নাম । মাঝে দিয়া আমার হইসে অনেক ইলজাম। ইলজাম ছুটানির লাইগা কচ্ছপের মত ঝাপাইয়া পড়লাম কামে। কিন্তুক টাইপাতে গিয়া দেখি হাতে বেদনা। লিখতে গ্যালেও বেদনা । এমুন কি , টাকার বিলে সাইন করতে গিয়াও বেদনা ! এ কি রে ! পেট ফাইটা কান্দন আইলো । আমি বিয়া করি নাই বইলা আমার এত্ত শাস্তি ? ক্যান? দুনিয়ায় কি সবাই বিবাহ করে ? জব্বার ভাই দেখি আইসা ঝাড়ি লাগাইলো । নাহ, বিয়ার লাইগা না । কিডা কিডা বুলে আমারে সালাম দিসে । আমিও ওয়ালাইকুম তফাত কইয়া ডুব দিলাম । আপিসের পুলিট্রিক্সে আমার পুলি আমি দূরে রাকি। লাইফ ইজ এ কমেডি । আই ওয়ানা লাফ ইট এওয়ে । আজাইরা কামে লাফ মাইরা পরে দুষ্কের গজাইরা গীত গাওনের কাম নাইক্কা । বসে চার্কি ছাড়সে । আরেক বসের লগে গুন্ডগোল । আমার কি? আমি কলা খাই । কলাতে পটাশিয়াম আচে । ব্লগাইতে আইয়া দেহি হাসিবে হাসুনির মায়ের নামে বিচার দিসে । নটি বয় । এক্কেরে নেটি পুলা। হাসুনির মায়েরে আমি বিলক্ষন চিনি। কত ডেট কর্চি । তাই একখান তেব্র পেরতিবাদ লিখলাম। আবার ও বেদনা । নাহ , এইবার চউখ দেওনই লাগে । তাকাইয়া দেহি হাতের আঙ্গুল ফুইলা কলাগাচ হইসে । আমি তো পাংখা ! এই বকরী ঈদে তাইলে মধুচন্দ্রিমা যাওন কনফার্ম। আঙ্গুল ফুইলা কলাগাচ মানে অনেক টাকার মালিক হওন-- মেয়েবেলার সমইস্ত ব্যা করন ভুলা গেলেও বাট কিন্তু এইডা ভুলি নাই । এই বার ঝড়ে সব বকরী দেহ রেখেছেন । ( তেন ঠাং চাড়া ) । সুতরাং ঢাকায় থাইকা ফায়দা নাই । সিকিম যাওয়া যাইতে পারে । মাগার এত ব্যথা কেলা ? আইজ কাইল নিজের সম্পর্কে অনেক কিছুই খেয়াল থাকে না । সব ভুইল্লা যাই । রবিবার মিটিং ছিলো , বাড়ির পাশে । ভুইল্লা গেসি । খাইয়া ভুইল্লা গিয়া দুই বার খাই । আবার কুনো দিন পেটে ছুচা নাচলে মনে পড়ে , অহ , রাইত নয়ডা বাজে । গত ২৪ ঘন্টায় কিছুই খাই নাই । রাতে ঘুমাইতেও ভুইল্লা যাইতেসি । বহুত বিছড়াইয়া মনেই করতে পার্লাম না । শেষ কালে কুটি বইনে ফুনে মনে করাইয়া দিলো , সকাল বেলা হাত পুইড়া গেসে । তাই এত ব্যথা , এত শোক , খাইতে মন চাইলো কোক। ছুডো বেলায় একবার ইস্তিরি দিয়া হাত পুইড়া গেসিলো । আমি ছুডো বেলা থেকেই অনেক বড় কবি । তাই থাকিতাম হইয়া উদাসী বনের পাখি । আর ভুইল্লা যাইতাম কুনডা ডাইন হাত আর কুনটা বাম । ইয়ে থি মেরা গাম । এক ছোটাসা বদনাম । তো এক হাতে ইঞ্চি তিনেক পুড়ার পরে সুবিধা হইলো । পুড়া দেইখা বুঝতাম পানি খামু নাকি পানি নিমু । এই বারও আমি খুব আশাবাদি । শোককে শক্তিতে পরিনত কইরালাইসি । জাগরনের কথা বন্ধুদের কাছে কইতে যাতে ভুইল্লা না যাই , তাই ঠিক করসি , যতবার ব্যথা পামু, ততবার একটা কইরা মেইল করুম। আপিসের ফুন দিয়া ফুনামু । আর দেখা হইলে , "জাগো ও ও ও ও ও ও ও ও " কইয়া ক্যাঁক কইরা ধরুম। পোড়া হাতে মলম আর লাগাইলাম না । যৌবনের স্বামী , থুক্কু, স্ত্রী আমারে যতই পোড়াক, আর যতই ব্যথা দিক , আমার আছে আয়োডিন বুদ্দি , তাই চোখে জল , মুখে হাসি । বাংলাদেশ ভালোবাসি ।

হয়ত কেউ নেই আশে পাশে , তবু কোথা থেকে আলো আসে?

কি বলবো ? আমি ভাষা হারিয়েছি । বার বার সিডার আক্রান্ত মানুষের খবর পড়ছি । ছবি দেখছি আর ডুবে যাচ্ছি । তীব্র অপরাধ বোধে ডুবে যাচ্ছি । প্রচন্ড শক্ত মানুষ হতে হয় যারা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করে তাদের। তারপর ও দরকার হয় মানসিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য । কারন এই পরিবেশ , এই ধ্বংস যজ্ঞ , এই মৃত্যুপুরী - সহ্য করা প্রায় অসম্ভব। নিজেকে রোবট বানিয়ে ফেলার পরেও খুব একটা কাজ হচ্ছে না । যারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তর্ক করছেন । যারা একে অপরের পেছনে লেগে আছেন। যারা তত্ত্ব এবং তথ্য নিয়ে আঁতলামি করছেন , তাদেরকে বলি, যান। একবার গিয়ে ঘুরে আসুন সিডরের ঘায়ে তছনছ হয়ে যাওয়া জনপদ গুলো ।অনেক ব্যক্তিগত আক্রোশ , অনেক ব্যক্তিগত কষ্ট , অনেক ব্যক্তিগত আক্ষেপ ফিকে হয়ে যাবে । গৌণ হয়ে যাবে প্রেমের প্রত্যাখান , অফিসের প্রমোশন না পাওয়া কিংবা বাজারের ফর্দ । জীবনের অনেক কিছুর মানে খুঁজে পাবেন হয়ত ।আবার অনেক কিছুই অর্থহীন হয়ে যাবে । প্লিজ যান, একটা বার ঘুরে আসুন । আমি জানি টিভি ছবি দেখাচ্ছে , পেপার ছবিসহ মানুষের কথা বলছে - তারপর ও - নিজের চোখে , নিজে উপস্থিত থেকে না দেখলে বুঝবেন না - কি কষ্ট , কি কষ্ট ! ৯১ এর ঘুর্নিঝড়ের পরে আব্বু রিলিফ নিয়ে গিয়েছিলো চট্টগ্রাম । যা দেখেছিল তার কোন বর্ননা আমরা আজো তার মুখ থেকে বের করতে পারিনি ।শুধু মনে আছে , ফিরে আসার পর দুই দিন মুখে কোন খাবার রোচেনি তার ।অথচ মানুষটা ৭১ এর ৯টা মাস লাশ আর হত্যা আর লুটপাট - সবই দেখে এসেছেন । ডাকাতের মত শক্ত হৃদয় মানুষটাকেও নিঃস্তব্ধ করে দিয়েছিলো ৯১ । কিছু বলতে পারছি না ।কিছু বলার নেই । যারা পারেন , তারা নিজের চোখেই দেখে আসুন। আমার ভাষা নেই । আমার চোখ শুকিয়েছে । আমারে শুধু দুইটা হাত আছে । আমি তাই নিয়ে চেষ্টা করে যাবো । আর আপনি ?

একটা সমন্বিত তথ্য ঘর কেন পাই না ? (সিডার)

সকালে এসে অফিসের সেকেন্ড ইন কমান্ডের কাছ থেকে আপডেট পেলাম । সিডোরের ত্রান কাজে গতকাল পর্যন্ত কি হয়েছে , তাই জানালো । সংখ্যা গুলোর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। সরকারী হিসেবে আক্রান্ত মানুষ, অনাথ শিশু , মৃত গবাদি পশু আর নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলের হিসাব । সাথে কোথায় কি বিতরন হয়েছে তার বর্ননা । আর ও কি কি লাগবে , কতদিনের জন্য , তার একটা দ্রুত করা অংক । একবার ভাবলাম , ব্লগে দেব নাকি আপডেট গুলো? মানুষ কি উৎসাহিত হবে জেনে তাদের পাঠানো টাকা গুলো কোথায় যাচ্ছে ! আবার মনে হলো , নাহ । মানুষ অর্ধেক কথা বোঝে না আর বাকি অর্ধেক ভুল বোঝে । যা আমি লিখবো উৎসাহ দেওয়ার জন্য , অথবা , স্রেফ জানানোর জন্য - তা হয়ে যাবে বিজ্ঞাপনী প্রচার । বাদ দিলাম । শুধু মাথার ভিতর দপ দপ করছে কয়েকটা তথ্য । আক্রান্ত সকল মানুষের অর্ধেক শিশু আর তাদের ভিতর ৫ বছরের নিচে শিশুর সংখ্যা ৬ লাখ। ঠিক কত জন শিশু এক বা দুই জন অভিভাবকই হারিয়েছে তার সঠিক সংখ্যা এখনো জানা যায় নাই , কিন্তু সেইটা বৃহত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এই সব শিশুরা শুধু অনাহার , আশ্রয়হীনতা কিংবা রোগের ঝুঁকির ( মহামারী আকারে ডায়রিয়া , কলেরা ইত্যাদি) ভিতরেই নেই - অরক্ষিত অবস্থায় তারা শিশুশ্রম , পাচার কিংবা শারীরীক মানসিক নির্যাতনের শিকারও হতে পারে । যেই শিশুরা অনাথ হয়ে গেলো , তাদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী সাহায্যের দরকার হবে। শুধু খাবার, পানি , ওষুধ দিয়ে তাদের বাঁচিয়ে রাখাটাই তো যথেষ্ট নয়। তাদের জন্য নতুন পরিবার চাই , চাই নতুন বাবা মা। চাই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা । অনেক লম্বা সময় ধরে পুনর্বাসনের কাজ চালাতে হবে । আমরা কয় জন এই বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারছি? সরকারী হিসেবেই দক্ষিণাঞ্চলের এলাকা ভেদে ৯৫% ফসল নষ্ট হয়ে গেছে । সরকারী গুদামজাত খাদ্যের মেয়াদ হলো ২০০৮ সালের মার্চ পর্যন্ত । কিন্তু , পরবর্তী ফসল মে মাসের আগে ঘরে উঠবে না । পাক্কা দুই মাসের বিশাল গ্যাপ ডিমান্ড এবং সাপ্লাই এ। ঝুঁকিপুর্ন গোষ্ঠীর জন্য খাদ্য সরবরাহের কাজ শুরু করবে সরকার ডিসেম্বর মাস থেকে । কিন্তু আসলেই কতজনকে এই ভাবে বসিয়ে খাওয়াবে সরকার? ক্ষেতের ফসল নেই। হালের বলদ নেই ।মাথা গোঁজার ঘর নেই।হাতে কোন পুঁজি নেই ।বীজ ধান নেই । কেউ কেউ সম্পুর্ন পরিবার হারিয়েছেন । কি করে পূনর্বাসিত হবে এই মানুষ গুলো ? এই ম্যাসিভ আকারের কাজ করার জন্য কতটা যুথবদ্ধ হতে হবে আমাদের ? কারো কোন ধারনা আছে ? ৫০ লক্ষ মানুষকে খাওয়াতে হবে, পরাতে হবে , নতুন করে উপার্জনের পথ করে দিতে হবে। আপনারা এখনো কি নিয়ে ব্যস্ত বন্ধুরা ? কারো চশমা ? কারো লুঙ্গি ? খুব গুরুত্বপূর্ন জিনিস বোধ হয় । ৫০ লক্ষ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ন । ব্লগে কম্পু জিনিয়াস অনেক আছেন জেনেছি । ত্রান কাজে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে সমন্বয়হীনতার । কেউ কারো খোঁজ রাখতে পারছেন না । কোথাও একাধিক বার ত্রান বিতরন হচ্ছে । কোথাও একেবারেই পৌঁছাচ্ছে না । আচ্ছা , সারা দেশ এবং বিদেশ থেকে কে কোথায় কি করছে , এই তথ্য গুলো একটা মাত্র ওয়েব সাইটে ঢুকানো যায় না রে ভাই? মানে , একটা নির্দিষ্ট লিংকে ক্লিক করলাম, জেনে গেলাম কোথায় কোথায় কি কি সাহায্য লাগবে। কতটা গেছে । আরও কতটা চাই । আমার সংস্থা কোথায় কি পাঠালো তার একটা আপডেট নিজ দায়িত্বে দিয়ে এলাম । এমন কিছু কি করা যায়? সামহোয়ার ইন কর্তৃপক্ষ , এই উদ্যোগটা নেবেন? একটা কমন প্লাটফর্ম । যে কেউ এসে তাদের ত্রান কাজের আপডেট দিয়ে যেতে পারে । যে কেউ এসে জেনে যেতে পারে । সমস্ত লিংক গুলো এক জায়গায় থাকতে পারে । মানে একটা "ইনফরমেশন সেন্ট্রাল হাব" এর মত । বুঝাই তো যাচ্ছে , অন্তত মে মাস পর্যন্ত ত্রান কাজ চলবে । করতে পারলে এইটা একটা খুব গুরুত্বপূর্ন রিসোর্স হবে সকলের জন্য । লিংকের প্রচারের কাজটা করতে পারবো । দেশী, বিদেশী , সরকারী , বেসরকারী বিভিন্ন গ্রুপে এই " হাব " এর খবর এবং লিংক পাঠানোর দায়িত্ব সম্মিলিত ভাবেই নিতে পারি । আপনারা এই ধরনের ডাটা ব্যাংক বানানোর একটা উদ্যোগ কি নেবেন? ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কমিটির ওয়েব সাইট থাকতে পারে । কিন্তু , সেটা ইন্টার এক্টিভ হওয়ার কোন সম্ভাবনা দেখি না । কারো মাথায় কিছু এসে থাকলে একটু শেয়ার করেন। [সিডারের কাজ করতে করতে মন মেজাজ কিছুতেই ভালো রাখতে পারছি না । লেখাটা পড়ে কারো খারাপ লাগলে দুইটা গালি দিয়ে মাফ করে দিয়েন । ]

বেশি ভিতরে ঢুকো না ( সাবধান, বিব্রতকর কথা আছে)

এই মহান বানীটি কে কবে কাকে প্রথম দিয়েছিলো , জানি না । তবে এই বানীটি যে মহান এতে কোন সন্দেহ নাই ।

কলেজে এক প্রেমিক জুটি ছিলো; দিন নাই, রাত নাই , খালি মেয়েদের ( আমিও সেই দলে) পিছনে লাগে । মাথায় কাপড় দাও না কেন ? বোরখা পড়া ছেড়ে দিলা কেন ? ছেলেদের সাথে এত হেসে হেসে কথা বলো কেন? নামায পড়ো না কেন? কার ওড়না কত লম্বা , কার বউ সবার সামনে স্বামীর হাত ধরেছে ! সবার মাথাটাই খারাপ করে দেয় আর কি ! তারা হইলো যাকে বলে টিপিকাল সুশীল সমাজের প্রতিনিধি , বুদ্ধিজীবী মেডিকেল স্টুডেন্ট । তো , ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষায় মেয়ে ফেল করলো । আমার প্রিয় বান্ধবী না হইলেও , একটা ভালো স্টুডেন্ট হুট করে ফেল করলে খারাপই লাগে । তব্ধা খাইলাম, বুঝলাম না কিছুই । হঠাত ফেল করলো কেন? মাইয়া কয় শরীর খারাপ। সত্য কখনো চাপা থাকে না । যেই ক্লিনিকে গর্ভপাত ঘটিয়েছিলেন এই মহিয়সী এবং তার সুশীল প্রেমিক , সেই ক্লিনিকেই একেবারে পড়বি পড় মালির ঘাড়ে , আমারই বন্ধুর সাথে দেখা এবং পালাতে গিয়ে ধরা খাওয়া । আমি অবাক হয়ে বন্ধুরে কইলাম , তাহলে আমাদের এত সমালোচনা করে , এত উপদেশ দিয়ে বেড়ালো যেই সুশীল , ধর্মপরায়ন প্রেমিক জুটি , তারা নিজেরা বিবাহের পূর্বেই এত সব কান্ড ঘটিয়ে ফেললো ? প্রিম্যারিটাল সেক্স আর একটা প্রান হত্যা তাইলে নামায না পড়ার চেয়ে কম খারাপ ? বন্ধু খালি হেসে বললো , "বেশি ভিতরে ঢুকো না।" আমি মাথা চুল্কাই । "কারে কইলা ?" দুস্ত কয় , তোমারে আর ঐ প্রেমিক -দুইটারেই !

তখনো পাশ করি নাই । পরিচয় হইলো এক বিদেশীর সাথে । ব্যাটা আমার ক্লাস প্রেজেন্টেশন দেখে পুরা পাংখা । সবার সাথে সেও প্রশংসায় পঞ্চমুখ । ইউনিসেফ এর ইয়া বড় কর্ম কর্তা । কার্ড দিয়া , ইন্টারভিউ এর জন্য ডাকলো । আমি তো আর নাই! লাখ টাকা বেতনের চাকুরী হেটে হেটে নিজে থেকে ধরা দিচ্ছে ! স্বপ্ন না মরীচীকা ! ইন্টারভিউতে আমি উত্তর দিবো কি, সে নিজেই আমি কত ভালো , কত বুদ্ধিমতী , কত সম্ভাবনাময় , ইনোভেটিভ ইত্যাদি ইত্যাদি বলে কুল পায় না। (দুনিয়াতে খুব কম বিষয়ে জানি। তবে নিজের বিষয়টা বোধ হয় খারাপ জানি না) কথা গুলা শিক্ষকদের মুখ থেকেও সারা বছর শোনার সৌভাগ্য হয়েছিলো বলে আমি তখনো সন্দেহ করতে পারিনি - আসলে কি ব্যাপার ! চাকরী আমার নিশ্চিত প্রায় , প্রথমে ছোট খাট প্রজেক্ট দিয়ে শুরু হবে । তারপর পার্মানেন্ট । তো কাজের অভিজ্ঞতা লাভের জন্য আমি আগামী সপ্তাহান্তে তার সাথে রাজেন্দ্রপুর সি ডি এম -এ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্কশপে যোগ দিতে পারবো কিনা । দুই দিন থাকতে হবে । পাক্কা দশ মিনিট আমার মাথাতে ঢুকেই নাই আসলে কি চাওয়া হচ্ছে ( আমি চরম গাধা নাকি বেশি অনভিজ্ঞ ছিলাম- এইটা এখন মনে হয় ) । আমি আরো বসে বসে চিন্তা ভাবনা করছি , ক্লাস আছে কিনা, পরীক্ষা আছে কিনা -- ভাবতে ভাবতে হঠাতই মাথায় দিমাগ কি বাত্তি জ্বলে গেলো । দ্রুত কথা শেষ করে বেরিয়ে এলাম। বের হতে না হতেই এক জিগিরী বান্ধবী অতি উতসাহে ফুন দিলো , " কি রে , কবে খাওয়াবি ?" অপমানে চোখ দিয়ে টপ টপ কইরা পানি গড়াইতাসে , তাও হাসতে হাসতে কইলাম, "লাখ টাকায় নিজেরে বিক্রি করার স্কিলটা এখনো শিখতে পারি নাই ।" বান্ধবী জিগাইলো , তাইলে "----" আপা চাকরী করে কেমনে ? আমি কইলাম , "বেশি ভিতরে ঢুকো না।"

প্রথম চাকরীটা করতাম একটা স্কুলে । বেতন তেমন বেশি না । কারো কারো ছুটি নিয়ে বিদেশ বেড়ানো আর হীরার আংটি , লেটেস্ট পারফিউম , গুচির ব্যাগ - কিছুতেই হিসাব মেলাতে পারতাম না। আমি সকালে চাকরী করি , বিকালে ক্লিনিক , তাও শালার হিল্লী দিল্লী করার কথা চিন্তাই করতে পারি না তখনো । বান্ধবীর বিয়ে হইলো ব্যাংকারের সাথে । তার স্বামীর অফিসেও দুই এক পিস এই রকম আছে । হিসাব মিলাই দিলো বান্ধবী। বসের সাথে পার ট্রিপ - এক সুটকেস কাপড় আর ক্যাশ টাকা । এখন আয়ের সাথে ব্যয়ের তুমুল অসঙ্গতিআলা কাউকে দেখলেই মনে হয় , " ইমন , চুপ! বেশি ভিতরে ঢুকো না।"

ছেলেটা মোবাইল বিশারদ । ল্যাভিশ লাইফ লিড করে ।গাড়ি, বিদেশ ভ্রমন , বান্ধবী ইয়ত্তা নাই । কোথায় পায় এত টাকা ? নতুন সেট কিনবো বলে তার সেটটা দেখার জন্য নিলাম । বেশ দামী সেটটার ভাও বুঝতে একটু সময় নিচ্ছিলাম । হঠাত কুতুব ফিস ফিস করে উঠলো , " আপি , প্লিজ , বেশি ভিতরে ঢুকো না ।" বদ্দার ডায়লগ ঝেড়ে দিলাম, " কি রাখছিস ? শরমের ছবি না গরমের?" মামুর হাসিতে যা বুঝার বুঝে নিলাম । ক্যামেরাটা ৫ মেগাপিক্সেল।

কর্পোরেট দুনিয়া । মাল্টি ন্যাশনাল দুনিয়া । দেশী বিদেশী ব্যাংক । মিডিয়া ওয়ার্ল্ড । ছিটে ফোটা ঘুরে বেড়ানো । কোথাও বন্ধু , কোথাও আত্মীয় । আমি মোটামুটি দুরেই থাকি । তাও কাজের সূত্রে বা বন্ধুদের মুখে জানতে পারি নানান কাহিনী । এইচ আই ভি প্রোগ্রাম গোপন প্রকাশিত , পরিচিত , পরিচয়হীন অনেক মানুষের কথা বলে দেয় । ডিজিএফাই এ ক্লাস মেট চাকরী করে । শুনি রঙ্গিলা সব ঘটনা ।

মানুষ বদলে গেছে ভীষন ভাবে । আমার প্রজন্মের ছেলে মেয়ে গুলোকেই আমি চিনতে পারি না । যাদের বয়স এখন ২৫ থেকে ৩০+ । কি এক সর্বগ্রাসী ক্ষুধা তাদের ভিতর । পেতেই হবে । সব কিছু পেতে হবে । সবাইকেই পেতে হবে । যে কোন মূল্যে । মানি , মাদক , মেয়েমানুষ - তিন এম এর পিছনে ছুট ছুট ছুট । মেয়েরাও পিছিয়ে নেই । সবাইকে পেছনে ফেলে সামনে যাওয়ার জন্য অনেক মাশুল গুনতে রাজি ।

বাংলাদেশে কি সার্ভাইভাল এতই কঠিন হয়ে গেছে ? কোন নীতি মেনে আর জীবন ধারন সম্ভব নয় ? নাকি আমাদের লোভ বেড়ে গেছে ? মানুষ নই আর , হয়ে গেছি কঞ্জিউমার ? পুঁজি অবশ্য বাজার খোঁজে । আর ক্রেতা । মানুষ তার দরকার নেই ।

মানুষে মানুষে সম্পর্ক তৈরী করাটাও এখন পুঁজিবাদী ভীষন ।

আমার বন্ধু আমার প্রোফাইল নেম দিয়েছে ।পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট গাধা ।

কেন? কারন আমার নাকি রাসূলের সময় জন্ম নেওয়া উচিত ছিলো । ওই যে, যখন সবাই সদা সত্য কথা বলিত । আমি মানতে পারলাম না । গাধা বলেছে আপত্তি নাই । হতেই পারি । কিন্তু , রাসূলের সময়ের মত কঠিন বিধি নিষেধ মেনে চলবে সবাই - এইটা তো আমি জীবনেও আশা করি না । কে বোরখা পরবে , আর কে ফ্রি সেক্স করে বেড়াবে - আমার তাই নিয়ে সামান্যতম চিন্তা নাই । যার যেই ভাবে বাঁচতে ইচ্ছা করে , বাঁচুক । ব্যক্তিগত ভালো মন্দ, পছন্দ -অপছন্দ মানুষের একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার । আমি কি আল্লাহ নাকি ? আমি কেন বিচার করতে যাবো ? আমি শুধু বন্ধুকে এইটুকুই বলছিলাম, আমি চাই মানুষ সত্য কথা বলুক । তুমি যা , নিজেকে সৎ ভাবে সেইটাই প্রকাশ করো । তার পরে আমার সাথে তোমার আকাশ পাতাল তফাত থাকলেও আমার কোন সমস্যা থাকবে না । তুমি সমকামী না চার্চের হেড নান , তাতে আমার কিছু যায় আসে না । তোমার বিশ্বাস তোমার কাছে । আমার বিশ্বাস আমার কাছে । আমরা বন্ধু হতেই পারি । এই টুকু চাওয়াতেই , " সর্বোৎকৃষ্ট গাধা " উপাধি পেয়ে গেলাম। আর বন্ধু ১ লক্ষ ১ বারের মত মনে করিয়ে দিলো , আমি রাগ ইমন এই দুনিয়ার জন্য ফিট না । জিগাইলাম, "তাহলে অনুমতি দাও, বিদায় নিয়ে অন্য দুনিয়ায় চলে যাই? " রাস্কেলটা এখনো জবাব দেয় নাই ।

আইরিনের বিবাহ সংক্রান্ত পোস্ট পড়ে একটা ঘটনা মনে পড়ে গেলো । বায়োডাটা দেখা হয়েছে । আব্বু আম্মু যথারীতি ছেলের পড়া লেখা , পরিবার , কাজ কর্ম , সামাজিক - অর্থনৈতিক অবস্থানের খোঁজ নিলেন । "মানুষ কেমন " দেখার দায়িত্ব পড়লো আমার উপর । কথা বলে মনে হলো, পারফেক্ট । কোথাও কোন দাগ খুঁজে পাওয়া যাবে না । কিন্তু , ততদিনে গাধার গোবর ভরা মাথাতেও কিছু ঘাস গজিয়েছে । ফলে মাথায় কিছু অক্সিজেন ও বহিতেছে । আমি আমার মত করে খোঁজ নিলাম । স্কুলে ও হাসপাতালে চাকুরী করার সুবিধা হলো , চোখের সামনে দেখেছি ক্লাসের ফার্স্ট বয় , পারফেক্ট অল রাউন্ডার ছেলেদের " অফ দা রেকর্ড" লাইফ এর কান্ড কীর্তি । এই গুলা কাহিনী তাদের পরিবার পর্যন্ত পৌঁছায় না । আম্মু চিল্লা পাল্লা করে জানতে চাইছে , " এই ছেলেটাকে বিয়ে করতে তোমার সমস্যাটা কোথায় ? খারাপ কি দেখলা ? " কি করে বলবো মাকে , আমার প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা কি করে বেড়ায় ! যা জানি , মুখ ফুটে বলতে পারলাম না । আম্মা সহ্য করতে পারবে না । স্রেফ বললাম , " বেশি ভিতরে ঢুকো না।"

মানসিক শান্তি বজায় রাখার কোন উপায় বুঝি আজকাল বাকি নেই । কানে তুলো , পিঠে কুলো দিয়ে গাধা হয়ে সারাদিন ঝিমাও । সি নো ইভিল। হিয়ার নো ইভিল । আর হ্যাঁ , বেশি ভিতরে ঢুকো না ।

দুঃসময় খামচে দিলে

যেভাবে সংখ্যা পেরিয়ে
শূন্যের দিকে যাওয়া যায়
সেভাবেই যেতে চাই
স্লেট থেকে সব মহৎ অংক মুছে ফেলে
কোন নদীর দিকে যেতে চাই !

তীব্র অপরাধ বোধে সারা রাত নির্ঘুম কেটে গেলো । বরিশাল যাওয়ার বিনা মেঘে বজ্রপাত ধরনের নির্দেশ এসেছিলো । স্রেফ ৫ মিনিটের নোটিশে সিদ্ধান্ত নিতে হবে , যেতে হবে রাতের ভিতর । কিন্তু যাওয়া হলো না। অথচ এই যাওয়ার জন্যই অপেক্ষা করে আছি ক'দিন ধরে । সারা বিকাল ছটফট করতে হলো অক্ষম হাত দুটোতে মোবাইল জড়িয়ে ধরে , অন্য কাউকে খুঁজে । পেলাম , শারমিন যাচ্ছে আমার জায়গায়। আমার যেতে আপত্তি ছিলো না । কিন্তু অসুস্থ ৭৪ বছরের পিতাকে সম্পূর্ণ একলা রেখে বরিশাল চলে যাওয়াটা আরেক অমানবিক কাজ হতো । তাকে এক বেলা একা রাখা যায় । তা'বলে সাত দিন? অসম্ভব । এক্সিডেন্টের পরে হাসপাতালে থাকা গেলো না , ব্যথা নিয়েই অফিস -বাসার দায় দায়িত্ব স্বীকার করে উঠে দাঁড়াতে হলো , হাঁটতে হলো হাসিমুখে (কিচ্ছু হয়নি , হাঁটতে পারবো , নো প্রবলেম) - তখনো এতটা খারাপ লাগেনি । নিজের শরীরটাকে কেটে ছিড়ে পুড়িয়ে ভাগাড়ে ফেলে রাখতে আমি ওস্তাদ । ব্যথা এত সয়েছি , এখন আর কষ্টকে কষ্ট মনে হয় না । মনে হয় স্মৃতি রোমন্থন। শরীর সয়ে গেছে আমার । কিন্তু এই মানসিক যন্ত্রনা থেকে বের হতে পারছি না । কত গুলো শিশুমুখ আমাকে বার বার ডাকছে । আমার কি ওদের প্রতি দায়িত্ব ছিলো না? উফ, এই সময়টাই কেনো একলা আমি। এত এত একলা । কেউ নাই , আমি ছাড়া , কোথাও কেউ নেই । সমস্ত দায় ভার , অক্ষম কাঁধে আবার!

জলের মত জটিল ছিলো দিন
জলের মত গড়িয়ে গেলো জলে
চোখের জলে বেড়েই ছিলো ঋণ
ছোঁয়নি যখন তোমার করতলে !

বাধ্য হয়েই পেপার পড়তে হচ্ছে আবার । দেশটাকে বিষাক্ত অর্গলে দমবন্ধ হতে দেখছি প্রতিনিয়ত। দেখতে ইচ্ছে করছে না। চোখ বন্ধ করে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের বাইরে ভাবতে ইচ্ছে করছে না । কষ্ট হচ্ছে খুব । কিন্তু চাইলেই কি অন্ধ হওয়া যায়? চাইলেই কি এড়ানো যায় প্রলয়? রাজনীতি , অর্থনীতি , সমাজ সংস্কৃতি - সকল অঙ্গনে চলছে সাদা চুনকাম। তবে তাতে ভন্ডামি এত বেশি যে মুখে চুন লাগিয়ে কাম কেলী ছাড়া আর কিছু হচ্ছে বলে তো মনে হয় না । সামরিক ধর্ষনজাত জারজ গণতন্ত্র শেষকালে কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না । জন্মনিয়ন্ত্রনের মত দুর্নীতি নিয়ন্ত্রনের প্রাকৃতিক পদ্ধতি শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের পরিবার পরিকল্পনা করে ছেড়েছে । বাস্তব জ্ঞান না থাকলে যা হয় । পরীদের কল্পনা করেই কাটাতে হচ্ছে । বাস্তবের পরিবার লোপাট ! দেশ চালানো আর যুদ্ধক্ষেত্র কি এক? নিয়ন্ত্রন আর নিয়মকানুন দরকার আছে । দরকার শাস্তি ব্যবস্থা ও । কিন্তু টুপিধারী দাড়াল আর তাদের বৈদেশী নাগরদের পদলেহন করে প্রলয় ঠেকানো যাবে না । যাবে না কারন ১৪ কোটি ভুখা পেট খাবার ছাড়া আর কোন নিয়ম মানবে না । বাজারে গেলে দমবন্ধ হয়ে আসছে ।

শহর ছেড়ে চলো এবার চলো গাঁয়ে
গাঁয়ের শুরু তোমার পায়ে পায়ে ।

স্বাধীনতা যুদ্ধে আপাত জিতে যাওয়ার পরে আমরা গ্রাম ভুলে থেকেছি । করেছি ঢাকার উন্নয়ন। আর শিয়ালে শকুনে দখল করে নিয়েছে গ্রাম। আমাদের অবহেলা এবার চারিদিক থেকে গিলে খাবে আমাদের । আত্মধ্বংসী এই প্রক্রিয়াটিকে বিপরীত মুখী না করতে পারলে আর একতা আশা করে লাভ নেই । বহুবার প্রতারিত করেছি আমরা সবুজ বাংলাকে । আজ সেই সবুজ নিয়েছে সামরিক আর জঙ্গী উর্দির জমিনে আশ্রয় । আমার নিজের দোষ । শোধরানোর পথ খুঁজছি ।

কবে শেষ হবে
এই সব মোটামুটি মরে বেঁচে থাকা?
অসময় খামচে দিলে
উড়বে কি স্বপ্নের ভীরু পাখা?

ব্লগের ডাঃ আইজুদ্দির জন্য উপহার

লিংকুপ্রচন্ড মজা পেয়েছি লেখাটা পড়ে ।এই বিষয়ে অনেক দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিলো ব্লগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি এবং নৃতাত্ত্বিক 'অন্যমনস্ক শরৎ' এর সাথে । শরতের সাথে আলোচনাটা জমেছিলো কারন সেইখানে শুধু দর্শন নয়, তথ্য এবং ধারনা এসেছিলো মানবের ইতিহাস, কবিতার ইতিহাস, কবিদের ইতিহাস এবং বিবর্তনের বিভিন্ন উপাত্ত থেকে। শরত একাধারে কবি, মানব গবেষক এবং বিজ্ঞানের একনিষ্ঠ পাঠক বলেই হয়ত আলোচনাটা একটা গ্রহনযোগ্য ব্যপ্তি পেয়েছিলো। আলোচনায় ব্লগের আরো অনেকেই ছিলেন যারা কবিতা লেখেন এবং ভালোবাসেন। তখনও এই গবেষনার ফল বের হয়নি । অথচ , আমরা দুই জনেই এই ধরনের একটা আশংকা করেছিলাম কবিদের নিয়ে। লেখাটা পড়ুন। আর চিন্তা করে দেখুন কবিতা আর লিখবেন কি না ! কবি, কবিতা এবং মৃত্যু নিয়ে একটা লেখা মাথায় ঘুরছে ক'দিন থেকে । সেই নিয়ে সামান্য 'হোম ওয়ার্ক' করতে গিয়ে এই গবেষনাটা পেলাম। হাসতে হাসতে শেষ । এর চেয়ে ভালো কোন উপহার ডাঃ আইজুদ্দির জন্য হতে পারে না । রাগ ইমনকে মনের সুখে জ্বালাতন করার জন্য ,এবং , ব্লগের কবিদের রগড়ানোর জন্য ইদানিং বেচারা আইজুদ্দির অস্ত্র কমে যাচ্ছিলো । দিলাম তুলে শিয়ালের হাতে মুরগি । কবিতাপ্রেমীরা এই ধরনের গর্হিত কাজের জন্য আমাকে দলে দলে এক দিয়া যান । নূরে আলাম ভাইকে হারাতেই হবে!

সুযোগের অপেক্ষায় থাকে বিষ

অন্তরে বিষ মেখে থাকি অন্তরীন
আমার চেতনায় বাজে কাল কেউটের বীন
আমাকে চেনো নাই ? তোমাদের বিলাসী মন
অদ্ভুত নিরবতায় ভুলে জল ও মাটির ঋণ !

ভিতরে খুঁড়ে দেখো , অচল পয়সার মত
আমিও নাব্য বেদেনী , বয়ে বেড়াই ক্ষত
নিয়তির টুঁটি চেপে ডাঙ্গায় নেবেছি একা
বুকের বাক্স পেঁচিয়ে উলঙ্গ , প্রতারিত ।

এই দুই কুড়ি এক গন্ডার ডিঙা সেঁচে
দু মুঠো ভাত, কলমী, মরিচে বেঁচে
বেশ থাকি চাওয়ার তেমন আর কি
নিবু নিবু কুপির ভিতরে জীবন সেঁচে ।

গন্ডগোলের বছর গেলো বাপ আর ভাই
বোনটা ছিড়ে খেলে আর কোন কুল নাই
ভোটে বা বিচারে বাইদা ডাকে না কেউ
কি জিতে আর হারে , আমি কার খাই ?


তাও কেউ যদি কয় রক্ত গাঙে বয়নি
এই দেশে কেউ লাশের গন্ধ সয়নি
বাক্সে বাক্সে আমার সাপেরা তড়পায়
কাটবো ঠিকই , এখনো সময় হয়নি ।

আইরিন শুনো

আইরিন শুনো ,
আজকে যদি তোমার ৯ রকমের সমস্যা
১৮ রকমের পড়া , আর ,
৩৬ রকমের পরীক্ষা না থাকে -
আমার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথে হাঁটবে ?

আমার আজকে ৩৬ রকমের কাজ ফেলে
১৮ রকমের দায় দায়িত্ব ভুলে
৯ রকমের কষ্টকে সিন্দুকে তুলে
স্রেফ তোমার সাথে হাঁটতে ইচ্ছে হলে
তুমি কি আমার এই ইচ্ছের ফিতে টুকু কাটবে?

Tuesday, August 21, 2007

নামাযের আগে আগে রিয়েলিটি টিভি !

ফজরের আযান দিলো । নামায পড়বো একটু পরে। ২১শে অগাস্ট প্রায় শুরু হয়ে গেছে। ভয়াল একটা দিন। শত শত মানুষের জীবন পঙ্গু হয়ে যাওয়ার দিন। আইভির খুন হওয়ার দিন। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপর নারকীয় হামলার ঠিক পরের দিন।
গত কয়েক দিনে একুশে টিভির লাইভ অনুষ্ঠান দেখছি । খবরের কাগজ ও ফলো করছি আগের চেয়ে বেশি। ( ই মেলা ডট কমে নিউজ পড়া যায় ২১ টা পত্রিকা থেকে ) । ঘটনার পরে ঘটনা । কিছু চিন্তা এসেই যায় ।
একুশে টিভি দেখতে দেখতে ছাত্র রজনীতির সাথে জড়িত এক বন্ধুর কথায় কিছু ইস্যু উঠে এলো । আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
তার ভাষায় , দেশ স্বাধীনের পর থেকে খুব ধীরে ধীরে আর ইদানিং কালে দ্রুতই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গীবাদের উত্থান হয়েছে। গত ৩০ বছর ধরেই সারাদেশে চলেছে ধর্মীয় লেবাশ ব্যবহার করে নানা ধরনের ব্রেইন ওয়াশ। কখনো খুন, জখম , ভয় দেখানো। দেশের অন্যতম গেরিলা কারখানা পার্বত্য চট্টগ্রামে চলেছে তালেবান ট্রেনিং।প্রমান হিসেবে বিভিন্ন দেশে , যেমন, ইরাক, প্যালেস্টাইন, আফঘানিস্তানে পাওয়া গেছে বাঙালী মুসলমান সৈনিক। ধর্মীয় ফ্যানাটিক দলের অস্ত্রধারী অঙ্গ সংগঠন গুলোর বিভিন্ন নামে বিভিন্ন জায়গায় লোক জন ধরা পড়েছে । ধরা পড়েছে অস্ত্র । এই গুলো সবই কিন্তু বিভিন্ন সময়ে পত্র পত্রিকা, বিবিসি , ভয়েস অফ আমেরিকা থেকে প্রচারিত রিপোর্ট।
বন্ধুর কথা হলো, আমরা জানি খুব ভালো করেই জামায়াত শিবির ৭১ এর পরে আন্ডার গ্রাউন্ডে চলে গেলেও ৭৫ এর পর থেকেই সরকারী পৃষ্ঠ পোষকতায় ( এবং সেটা ৭৫ পরবর্তী সব সরকারের আমলেই) এবং বিদেশী প্রভুদের সাহায্য পুষ্ট হয়ে সারা বাংলাদেশেই তাদের কার্যক্রম চালু রেখেছে। দেশব্যাপী তাদের বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্কিং এর আওতায় একদিকে নতুন নতুন সদস্য সংগ্রহ ( ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ) আরেক দিকে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ( বর্তমানে বছরে ১২০৬ কোটি টাকার টার্ন ওভারের ব্যবসা) চলে আসছে। নাশকতামূলক কার্যক্রমের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ততা তারা মাঝে মধ্যেই অস্বীকার করে । কিন্তু, মজার ব্যাপার হলো , এই পর্যন্ত যত গুলো বিরাট ঘটনা ঘটেছে বোমা, অস্ত্র, খুন, গোপন হত্যা তালিকা ইত্যাদি নিয়ে - সবখানে যে সব লোক জন ধরা পড়েছে বা মারা গেছে , তাদের পাওয়া গেছে জামায়াত কানেকশন। তারা জীবনে কোন না কোন সময়ে জামায়াত করতো । তাদের কাছে পাওয়া দলিল এর ভিতর মওদুদীর বই পাওয়া গেছে সব ঘটনায়। সবচেয়ে কাছের ঘটনা হলো "বাংলা ভাই"।
এখন কত গুলা প্রশ্ন যে গুলো অনেকের ভিতরেই দেখছি -
১। "বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি" এবং "ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করলে মিলিট্যান্সির পথ অনিবার্য" - এই দুইটাই কিন্তু মতিউর রহমান নিজামীর বানী । বাংলা বাইয়ের ফাঁসি হতে পারলে "বাংলা ভাইকে বানানো নাটক বলে লুকিয়ে নিরাপদে রাখার চেষ্টার " কারনে নিজামীর কেন ৩০৪ ধারায় বিচার হবে না?
২। বছরে ১২০৬ কোটি টাকার ব্যবসা করার প্রথম পুঁজিটা জামায়াত কোথায় পেয়েছিলো ? দ্বীনের পথের লোক জনের এত কোটি কোটি টাকার ব্যবসার কি দরকার?
৩। জামায়াতের পেয়ারে নেতা মওদুদী তো পথে পথে ঘুরে লোক জনকে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার কথা বলে নাই । ইসলামের বিভিন্ন সমালোচনা করার পাশাপাশি ( মওদুদী কড়া ভাষায় ইসলামের সমালোচনা করেছেন ,মওদুদীর সব কটা বই না পড়লে বুঝবেন না ,পড়ে দেখুন) রাষ্ট্রযন্ত্র দখল করার , দরকার হলে রক্ত বিপ্লব করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের নির্দেশ দিয়েছেন। তাহলে, সেই নেতার প্রতিষ্ঠিত দল জঙ্গী বিপ্লবের সাথে জড়িত না, এইটা বিশ্বাসযোগ্য?
৩। খবরে প্রকাশিত সেই বহুল আলোচিত অস্ত্র ভরা জাহাজ । ফকা চৌধুরীর ছেলে সাকা চৌধুরীর জাহাজ ছিলো সাগরে। জাহাজটি ভেড়ার কথা ছিলো যেই সার কারখানার জেটিতে সেটি কৃষি মন্ত্রনালয় ,( নিজামীরমন্ত্রনালয়) এর আওতাভুক্ত । ঐ ঘটনার তদন্ত কই?
৩। বগুড়ার দুই ট্রাক অস্ত্র। ধরা পড়া লোক গুলার জামায়াত কানেকশন । কি হলো তারপর?
৪। ২১শে অগাস্টের বোমা হামলায় সাকা চৌধুরীর নাম শোনা গেছে বার বার । শোনা গেছে জামায়াতের নাম। ব্যাপারটা কি?
সাংবাদিক ভাইয়েরা , জিজ্ঞেস করেন না কেন-
বাংলা ভাই এর গ্রেফতার না করে উলটা তাকে নিরাপত্তা দিয়েছিলেন বর্ত্মানের আই জি । তিনি কেন সেদিন বাংলা ভাইকে গ্রেফতার করতে পারেন নাই ? বাংলা ভাই মানুষ খুন করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখার পরেও, সারা দেশের পত্রিকায় নির্যাতিত মানুষের সাক্ষাতকার , ছবি ছাপানোর পরেও কেন আই জি সাহেব এই লোকটার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে পারেন নাই?
বাংলা ভাইয়ের ফাঁসী হলেই সব কিছু শেষ হয়ে যায় না। আই জিকে বলতে হবে তার হাত পা বেঁধে রেখেছিলো কারা ? নাকি তিনি সুবিধাভোগী ছিলেন কোন দলের?
[বিচার আচার না হওয়ার একটা কারন অবশ্য বন্ধু বলেছে । যারা দায়ী তারাই বিচারের প্রক্রিয়া আর ক্ষমতার সাথে যুক্ত থাকতে পারে। তাইলে আর আসামী ধরবেন কি করে? ]
যে কোন যুদ্ধে হেরে যাওয়া সেনা বাহিনীর সদস্যদের আর চাকরীতে রাখা হয় না। স্যাক করে দেওয়া হয় । সাইকোলজিকাল প্রবলেমের আশঙ্কায়। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাদের হেরে যাওয়া আর্মি অফিসারদের চাকরী থেকে বরখাস্ত করেছে ।
পৃথিবীর ইতিহাস ঘেটে দেখেন, প্রতিটা জাতি তাদের নিজেদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করেছে ,লড়াই করেছে , এই রকম সকল ব্যক্তিকে দেশ থেকে বহিষ্কার করেছে । এমন কি পেয়ারে পাকিস্তানের মওদুদীও পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতার কারনে পাকিস্তানেই নিষিদ্ধ ছিলো ১৯৪৭ এর পরে বহুত দিন। বহু কান্নাকাটি করে পরে পাকিস্তানে ফিরতে পেরেছিলো।
কিন্তু বাংলাদেশের অবস্থা দেখেন। গোলাম আজমের আপন ছেলে সেনাবাহিনীর বিরাট অফিসার । বাংলাদেশের বিরোধী পরিবারের উপর বাংলাদেশ রক্ষার দায়িত্ব?
আমরা কি কোন দিন আমাদের বাড়ির দরজায় দারোয়ান হিসেবে কোন বিতর্কিত ব্যক্তিকে চাকুরী দেই? আপনি দেবেন কোন দাগী আসামীকে দারোয়ানের চাকরী ? যেখানে নিজের বাড়ির মত একটা জিনিসকে কোন বিতর্কিত ব্যক্তির হাতে আপনি ছাড়তে রাজি না, সেইখানে নিজের দেশটাকেই " স্বাধীনতা বিরোধী " পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া সমর্থন করছেন?
গোলাম আজমের ছেলেকে সেনা বাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হবে না কেন? তাকে "দেশরক্ষা বাহিনী"তে ঢুকতে দিলো কে? কেনই বা কোন প্রতিবাদ হলো না?
বাংলাদেশের কোন সরকারের আমলে যারা কোন দিন খারাপ থাকে না, তা হলো , সেনাবাহিনী। তাদের বাজেট আজও গোপন । আমাদের ট্যাক্সের টাকায় সেনাবাহিনী যা ইচ্ছা তাই করে, আমরা জানিও না কত টাকা কোথায় খরচ হইলো । সবার আয়ের ব্যায়ের হিসাব চাইছে দুদক, সেনা বাহিনীর ব্যায়ের হিসাবের কি হবে?
গোলাম আজমের ছেলের হাতে যদি থাকে সেনা বাহিনী আর দেশ থাকে সেনা বাহিনীর হাতে , তাহলে , জামায়াতের বিচার কি করে হবে? কি করে চলবে বিচারের আইন , তদন্ত তার নিজের স্বাধীন গতিতে?
আমি আমার বন্ধুর প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি । আপনি পারবেন?

Sunday, August 19, 2007

বিরুদ্ধ বাতাসে চাই তোমার আঁচল


চারিদিকে হেমন্তের হিম নেমে আসে

কালান্তক শীত নামে বসন্তের ঘাসে

আমি অসহায় একাকী ভাবি শুধু একটা শান্ত মুখশ্রী

আমি তাঁর মালিকানাধীন আবাস নই

ভেসে যাওয়া কামারখালি , কালো ছই

নোঙ্গর ফেলার অবকাশে হারিয়ে ফেলা কোন তিথি


আমার কাছাকাছি থাকে না রবি

আমি দুপুরের রোদে মুছে যাওয়া ছবি

খুঁজে ফিরে আসি একটা শূন্য বিছানায় , ঘরে

অতর্কিত একাকীত্বকে ছুড়ে ফেলে ভাবা

নিঃসঙ্গতার সিড়ি বেয়ে নিরন্তর নাবা

এভাবেই কেটে যাওয়া চিরচেনা কক্ষপথ ধরে


অথচ তৃতীয়া ছিলো না এমন আশা

ছিলো না আঁধারে পথ ভুলে ভাসা

আহত চাতকের পাখায় ছুঁয়ে এক নদী জল

মায়াবী , অভিমানী হলে জেনে রেখো

ঈষানের কোনে জানালা খুলে দেখো

এখনো বিরুদ্ধ বাতাসে চাই তোমার আঁচল !

Tuesday, August 14, 2007

সেলিন , চন্দ্রবালা !


গভীর রাতে চাঁদের পিছে র‌্যাব লাগিয়ে দেব

জোসনা কেন তোমার পিছে ,এই খবর ও নেব

ঢুকলো কেন তোমার ঘরে আলোর অজুহাতে ?

পর পুরুষের শোবার ঘরে এই নিশুতি রাতে!


ফাজলামোটা দেখলে পরে ধরবে গায়ে জ্বালা

জোসনা নাকি "পাস " পেয়েছে , চাঁদ নাকি তার খালা !

রোস বেয়াদব , হাইকোর্টে করবো এবার রিট

রবির কাছে নালিশ করে করছি তোমায় ঢিঁট !


আকাশ বাতাস সাক্ষী আছে , ঐ ছেলেটা আমার

জোসনা তবু সুযোগ পেলেই টাংকি মারে , চামার!


ঘুমিয়ে গেলে অবুঝ বালক আর কিভাবে বোঝে

জানলা গলে ওর দু চোখে কে তাকিয়ে খোঁজে

এক জীবনের পিয়াস ঢেলে আকুল প্রেমের খনি

আমি তো না , জোসনা ওটা , দুষ্ট সে রমনী !


পূর্ণিমাতে জোসনা , জানো , খুব বাজিয়ে নুপূর

ঝরতে থাকে তোমার গালে, চুপটি, টাপুর টুপুর!

তুমি তো আর টের পাও না , পাশ ফিরিয়ে শুলে

জ্যোৎস্না ঠিকই হাত বুলিয়ে দেয় গো তোমার চুলে

তোমার পিঠে গাল ঠেকিয়ে গুন গুনিয়ে ফেরে

তার পরও কি ধর্মাবতার , জ্যোৎস্না দেব ছেড়ে ?


কৃষ্ণ - শুক্লা সব দেখেছি , জ্যোৎস্না হলো চোর

মন ভুলিয়ে প্রাণ দুলিয়ে দেয় লাগিয়ে ঘোর

ঠিক জেনেছি , ও চায় আমার বালক তারও হবে

এমনতর সতীন বলো কে শুনেছে কবে!


মানবো কেন ? যে যাই বলুক, একলা মালিক আমি

ভাগ করে কি ভালোবাসা ? ভাগ হয় কি স্বামী !

সুয্যি মামা, বিচার করে একটা বিধান দিও

জ্যোৎস্না কেন করছে চুরি আমার যে জন প্রিয় !


চন্দ্রাহত এই বাদিনী , আদালতের কাছে

সুবিচারের খানিক আশায় আজকে চেয়ে আছে !

সবুজ আদর অবুঝ রোদে


আমার আদর চাদর হবে

জড়িয়ে তুমি বাঁদর হবে

খুনসুঁটিতে মাত্তে পারো

আমি না জিতি , তুমিই হারো

অতুল আদর নাছোড় হবে

ধুম আনন্দে কাতর হবে!


মনে পড়ে ঘাসের বন? সেই দিনটা ? একটা দিন । আমাদের দিন। তোমার - আমার । উপরে নীল বিছিয়ে আকাশ বলে দিলো , নাও শুয়ে পড়ো মেঘের বালিশে । রঙধনু গান গেয়ে নাকি ঘুম পাড়াবে খালি সে! কিন্তু আমাদের ছুটোছুটি দেখে ঈষাণ ভরে নালিশে ।


কিষানের সবুজ ।পায়ের তলায় শর্ষে । মিষ্টি রোদটা কেবলই পিছলে পড়ে পড়ে যায় । তাল কি আর মেলাতে পারে দুটো চড়ুইয়ের সাথে ? চড়াই পেরিয়ে ঢাল বেয়ে নেমে যাই চারটে পা। "চাঁদ চকোরে অধরে অধরে ,পিয়ে সুধা প্রাণ ভরে "।


প্রাণে কিসের দোলা লাগে । খোলা হাওয়ার মাতন তোমার চুলে । আমি টেনে দিয়েছি ভুলে । তার পর পালাই পালাই পালাই । বেশ তো , ঐ শাপলা নদীতে নেমে লুকিয়ে পড়বো । কিন্তু , তুমি যে পানকৌড়ি ! বানের মত ঠিক ভাসিয়ে নিলে । বেনীতে বেঁধে গুটিসুঁটি । আমরা এত্ত টুকুন একটা মানুষ দুটি!

Tuesday, August 7, 2007

তোমার খান্ডব দাহন


তোমার খান্ডব দাহনকে মুঠোয় পুরে ভিজতে ইচ্ছে করে

তিন তিনটে হিম যুগ পেরিয়ে এসে

শীতল মানুষ যেমন আঁকড়ে ধরে প্রমিথিউসের আগুন!


তোমার বিষ পুষ্পে চুল সুতো করে মালা গাঁথতে ইচ্ছে করে

আমরণ অন্ধকারে ডুবে থেকে

উঁই মন যেমন খোঁজে গার্ডেন অফ এডেনের ফাগুন !


তুমি আমি দুজনেই জল ভালোবাসি

মেঘনার মোহিনীকে দেবে একবার যমুনার যূপকাঠ?

Monday, August 6, 2007

আউলা


তোমায় পাশে পেলে আমি ছেড়ে যাব বেহেস্তি সুঘ্রাণ

জাহান্নামের আগুনে বিড়ি জ্বেলে দেবো আয়েশি সুখ টান


Saturday, July 28, 2007

এমন করে বাসবো ভালো !


লাখো কি মেহফিলমে ভি একেলা মেহসুঁস হোনে লাগে

তেরে যানে বাদ , হাম সফর , তেরে আনে কে আগে

তুনে এক শহর ছোড়া

ম্যায়নে দুনিয়া ছোড়দি



In a gathering of millions

I feel isolated from the universe

You have left my city

Now its baren and dead with out you!



তোমায় এমন বাসবো ভালো

মৃত্যু এসে থমকে যাবে


তোমায় আমি খুব জড়াবো

আজরাঈল ও চমকে যাবে


ভাববে প্রভু , এই দুজনা

আবার কেন একলা হবে?


এক আত্মায় টুকরো করে

শান্তি কি আর রইবে ভবে!



ঈশ্বরের হাত কেঁপে যাবে যেদিন সময় হবে কাউকে ডেকে নেওয়ার । প্রভু কি তাঁর সবচেয়ে বিশুদ্ধ প্রেমের রূপটিকে ভেঙে ফেলার মত কঠোর হবেন? তিনি কি হারাতে চাইবেন , তাঁর আনন্দ খনি ? আমি তোমাকে যেমন করে ভালোবাসতে চাই , সে তো মহাকালের সময় আধারিত নয় , প্রিয়! আমি তোমায় যেমন করে ভালোবাসতে চাই , সে তো বস্তুবাদীতায় আক্রান্ত নয় । আমি তোমায় যেমন করে ভালোবাসতে চাই , সে তো যুক্তি, হিসেব আর স্বাভাবিকতার শৃঙ্খলে শিকলিত নয় , প্রিয়ম। আমার ভালোবাসায় মুক্তি । আমার প্রেমে স্বাধীনতা । আমার বাহুতে শান্তি । আমার বুকে , তুমি , তুমি , তুমি ।


জিন্দেগীমে তো সব হি পেয়ার কিয়া করতে হ্যায়

ম্যায় তো মর কর ভি , মেরি জান, তুঝে চাহুঙ্গা !


তু মিলা হ্যায় , তো ইয়ে এহসাঁস হুয়া হ্যায় মুঝকো

ইয়ে উমর মুহব্বত কে লিয়ে থোড়ি হ্যায় !


সবাই তো জীবনে চায় প্রেমের অবগাহন

আমি তো তোমায় মৃত্যুর ঐ পারেও চেয়ে যাবো

তোমায় পেয়ে খুব বুঝেছি যতই বাসি ভালো

একটা জীবন ভীষন ছোট , ভরবে না তো এ মন!


Friday, July 20, 2007

তোমার ঠোঁটে


তোমার ঠোঁটের চৌকাঠে প্রিয়
দাঁড়ায়েছি দেখো আজ ভিখারিনী
বিভাবরী , মরি! চাঁদের এই আলো
বরষার মেঘ দু’কুল হারালো
দাও অনুমতি , হৃদয়ের পতি ,
লও ঘরে , করো পান্থ রে ঋণী ।

কমল কপোলে , নয়নের দিঘী
তরে থর কাঁপে হিয়া বিরহিনী
রঙধনু বাঁকে রাঙানো দুয়ারে
সচকিত স্থিত চরন রুয়া রে
কর্ণ ফলকে , পুলকে পলকে
প্রণয় মদিরা করি বিকিকিনি !

Friday, July 6, 2007

আন্মডারেটেড দেশপ্রেম ইন্টারনেটে বদলায় না

অল এনিমেলস আর ইকুয়্যাল - সাম এনিমেলস আর মোর ইকুয়্যাল দ্যান আদার্স

জর্জ অরোয়েল ( এনিমেল ফার্ম)

অশরীরী শরীরেও লেগে গেলো দাগ
দেখেছো কখনো কোন নিদাগ মেয়েবেলা ?
নখরের সাথে মিলে খুরের উন্মাদ
খেলে চলে ক্ষমতাকে চেটে দেওয়া খেলা

এই সব কোন দিন হয় না পুরানো
কারবালার হোসেইন কিংবা বৃটিশের কেরানী প্রেম
শোষকের প্রথম পছন্দ মীর , ভাতের কাঙাল
কাকেদের মধু মধু আনুগত্যের হেম

আমাদের কেউ কেউ , যারা বুঝে ফেলি
দৃঢ় পায়ে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নেই উলঙ্গ প্রতিরোধ
ঘাসমূলে প্রান্তিক ভালোবেসে, আত্মজ ভুলে
বুকের রক্তে দিতে চাই ২৫শে মার্চের শোধ

মুক্তিকামী যোদ্ধারা কেউ ভাবেনি “ফিরবো”
আমরাও ফিরি না কাগজ ও কোটার লালসায়
জীবন আর শরীর , চেতনায় বাংলা মায়ের ঋণ
থু থু দেই তোদের ঘুষের ব্যবসা , লাভের মালশায়।

বিউটি খালার মডারেট মুমিন , দেখি সবুজ প্রেমে মত্ত
ডিজিটালেও পুরান মদের নতুন শিশি’র পসরা
আমরা খালি অবাধ্য রই মদ ছোঁব না পণে
দেশ বিকিয়ে কিনবো না কেউ বেহেস্ত যাওয়ার খসড়া !

Thursday, July 5, 2007

কতটা মেঘ ঝরে গেলে শুকিয়ে যায় নূহের প্লাবন ?

প্রশ্নটা আক্ষেপ নয় । অনেকটা আত্ম উপলব্ধি । সামহোয়ারে কেন , কি ভাবে গিয়েছিলাম - সে গল্প হয়েছে । কেন ছুটি নিলাম - সেই নোংরামি আর ঘাটতে মন চায় না। রবার্ট ব্রুসের ধৈর্য্য রাগ ইমনের । আমি হয়ত অতটা সময় নষ্ট করতে রাজি নই । শুধু মাঝে মাঝে ভীষন বিষন্নতা চেপে বসে । কেন? জীবন আমাকে অনেক নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে । সত্যিই দিয়েছে । দাম নিয়েছে অনেক বেশি কিন্তু সর্বহারার দাবী তুলতে পারিনে কখনো । সেই তুলনায় সামান্য একটা ব্লগের "বোগাস " বাড়ি কেন আমার মন খারাপ করে দেবে? উঁহু । কোন যুক্তি নেই ।

যুক্তি নেই বলেই খুব ভালো করে জানি , এই বিষন্নতার কোন স্থায়িত্বও নেই আমার ভিতরে । চির আশাস্থিত আমৃত্যু বৈরাগী । এইটে হয়ত অদ্ভুত কিন্তু সবচেয়ে সত্যি আমার বেলায় । আমি থামতে জানি না । চাইও না। কিছুই যাবে না ফেলা । রাগ , অভিমান , ঘৃনা এবং তোমার অবহেলা । কিছুই যাবে না ফেলা। সামহোয়ারে নেশা ধরে গিয়েছিলো । ব্লগার বা মন্তব্য নয় । লেখার নেশা । লিখতে পারার নেশা । আমার মেয়েবেলার নেশা । নেশা ধরে গিয়েছিলো ভালোবাসার । এইটে তো আমার বনেদী নেশা ! কাউকে এক মুহূর্তের জন্যও না চিনে, না জেনে , বিন্দুমাত্র প্রতিদান আশা না করে মানুষকে ভালোবাসা । স্রেফ ভালোবাসা । চিকিৎসক হিসেবে এই ভালোবাসার সুযোগ - যেটা তাৎক্ষনিক কিন্তু স্থায়ী - মানুষকে ছুঁয়ে দেওয়ার এই নেশাটুকু ফিরে পেয়েছিয়াম সামহোয়ারে। আমার সাম্প্রতিক দিনকাল মানুষকে সামনাসামনি ছুঁতে দেয় না গো ! বড় কষ্ট হয় আমার । কাগজে কলমে কি মানব ভজন হয় ?

রাগ ইমনের কিংবা আমার - কারো কোন অস্তিত্ব নেই। না আমি জন্মেছি , না আমি মরবো । অস্তিত্বহীনের থাকে না মুছে যাওয়ার ভয়। কিন্তু মানুষের স্পর্শে স্পর্শে জেগে থাকা , কারো ভিতরে ভালোবাসার বীজ বুনে দিয়ে - সৃষ্টির উচ্ছ্বাস নিয়ে দেখে যাওয়া - ঐ দেখো কেমন ফুটে উঠেছে একটি কুঁড়ি , দুটি পাতা! আহা রে ! সে কি আনন্দ ! মানবই ঈশ্বর ! আমার উপাসনা । মানবের ভিতর দিয়ে আমি ঈশ্বরকে পেয়ে যাই । আর ঈশ্বরের ভিতরে দেখি মানব চরিত্র!

তোমরা যাই বলো । আমি কিন্তু গান , কবিতা , অভিনয় , ছবি আঁকা - কিছুকেই শিল্প মানিনে । মানুষ আমার কাছে শিল্প । সবচেয়ে মহৎ , সবচেয়ে জটিল , সবচেয়ে সহজ আবার সবচেয়ে বিধ্বংসী শিল্প ! তবু , সে আমার শিল্প।

শিল্পের নেশা হলো কাঁকড়াবিছে নেশা । কামড়ে ধরেছে যখন, ছাড়াতে তো সময় নেবেই ! চলুক তবে । লেখার সাথে খেলা । হয়ত পার হয়ে যাবো সিথান , উঠোন , বাথান ঘেষে কপোতাক্ষের পার । হয়ত চোখের ভিতরে জমে যাবে আঁধার । হয়ত তো মেঘেরাও একদিন চাইবে ছুটি । হয়ত এই বাড়িতেও দেখবো কাফনের লুটিপুটি । তবু , আজকের জন্য , এইখানে একটু বসি ।

ইমন, খারাপ লাগছে ? দুরো , বোকা মেয়ে । সামহোয়ারে তোমায় নিয়ে সবাই মিলে ব্যবসা শুরু করেছিলো , তুমি বুঝতে পেরে সরে এসেছো । তুমি কি মানুষ আজ নতুন চিনছো ? মনে নেই? অন্ধকার মনে নেই? ঐ যে , যখন মাত্র ২৪ ঘন্টায় বদলে গেলো চির চেনা ভূগোল ! স্প্রিন্টের রানী , খেলার মাঠের অপ্রতিরোধ্য চাম্পিয়ন - এক রাতের ভিতর হয়ে গেলো "পঙ্গু" , মনে নেই? কেউ ছিলো আশে পাশে ? ভোঁজবাজির মত হাজার হাজার প্রেমিক, ভক্ত , বন্ধু , আত্মীয় - পালিয়ে বাঁচলো , মিলিয়ে গেলো একটি "রিস্কি ইনভেস্টমেন্টের " ভয়ে!

আর কি আশ্চর্য - রাস্তা ঘাটের অপরিচিত মানুষ , হাসপাতালের ৮০০ টাকা বেতনের কেরানী , ডাইনিং হলের এজাজ কিংবা কামাল ভাই , টেলিফোনের ঐ পাশে অপরিচিত যুবক ! এরা কেউ কাঁদলো । কেউ সারা মাসের একদিন ছুটি পরিবারের সাথে দেখা না করে চলে গেলো পীরের মাজারে , অব্যর্থ ওষুধের খোঁজে। কেউ ঘড়ি ধরে প্রতিদিন খবর নিলে, দিলে ব্যথার ওষুধ । কেউ, না চিনে না জেনে, বসে রইলে বাংলাদেশে উৎকন্ঠিত অপেক্ষায় - "আচ্ছা, সিঙ্গাপুরের ডাক্তার কি বললো , আপনি কি আর কোন দিনই হাঁটতে পারবেন না?" আর বরুনদা ! বাগানের মালী । " আপা , আমার একটা পেশী কেটে নিয়ে লাগালে আবার হাঁটতে পারবেন না? বলেন না ডাক্তার বাবুকে ! আমি দোবো ।"

তুমি ঐ দিন দাঁড়িয়েছিলে জীবনের সবচেয়ে বিশুদ্ধ সত্যের সামনে । তুমি ঐ দিন জেনেছিলে , ভালোবাসা কি। তুমি ঐ দিন নিয়েছিলে নিজের সবচেয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত । বোকা বোকা শত্রুরা কোন দিনও বুঝবে না । অভিমানী বন্ধুরা কোন দিনও জানবে না । যেই মেয়েটা হুইল চেয়ারে বসে পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে থাকে - তাকে বুঝিয়ে দিতে হয় না কি ভাবে উঠে দাঁড়াতে হয়। যে বিশ্বাসঘাতকের হাত ধরে হাসতে জানে - তাকে শিখিয়ে দিতে হয় না সাহস কি ভাবে ধরে রাখতে হয় । যে তার শত্রুর কষ্টে কাঁদতে জানে তাকে দেখিয়ে দিতে হয় না কতটা ভালোবাসা যায় যখন তুমি নিজে সকল চাওয়া পাওয়ার বাইরে ।

_______________________________________________________

একজন প্রকৃত মুমিন কোন সম্পদ চল্লিশ দিনের বেশি জমা করে না।

Monday, July 2, 2007

এলোমেলো টুকরো ভাবনা

১।
রাগের নাম খুঁজে পেলে এক মুঠো সুর
আকাশ তখন ছিলো মেঘলা প্রেম বিধুর
সে আকাশে নামে স্বরের খেলা ফোটা
কি সব রাগে ভেঙে পড়ে বুকের চিলে কোঠা !

২।
চরিত্রহীন সে, দুষ্ট লোক
করেছে ভোগ
বিধাতার আনন্দ ধামে ।
জীবনের অবিমিশ্র দামে
সে কি না খুঁজে নিলো বিষের বাটি
অথচ পাশেই পড়ে ছিলো শুদ্ধতার খুঁটিনাটি !

৩।
সব কালচে মেঘের নিরাপদ আচ্ছাদন ছুঁড়ে ফেলে
বিষন্ন রোদের কম্বলে উষ্ণ হয় নাগরিক বেসাতি
প্রিয় কলমের খাপ চৌচির । পরোক্ষে কালি ঢেলে
মুছে নেই যত পেন্সিলে লেখা প্রেম আত্মঘাতি !

Thursday, June 28, 2007

বিচার (গল্প) - রাগ ইমন

বিচার

রশীদ সাহেব উকিল হিসেবে আগুন ঝরিয়েছেন , সে অনেক কাল আগের কথা । এখন তার দেখানো পথে নতুন চ্যাংড়া “উকিলেট”রা আলো ঝরায় কোর্টের অলি গলিতে ।খোলা আগুন নিষিদ্ধ আছে , বোমাবাজির পরের দিন গুলাতে ।সতীর্থদের নিয়ে হাসাহাসি করেন রশীদ সাহেব। মোবাইলের লাইট ছাড়া এই চ্যাংড়া গুলোর ভিতরে তিনি কোন দেশ বদলে ফেলা আগুন পান না । রশীদ সাহেবের তত্তাবধানে কাজ করার সৌভাগ্য তাই কোন উকিলেটের সহজে হয় না। নিজের কতগুলো নীতি রশীদ সাহেব ভীষন ভাবে পালন করেন ।সেই নীতি গুলো আজকালকার খুব কম ছেলে মেয়ে মেনে নিতে পারে । অতি দ্রুত নাম এবং টাকা কামানোর এই বেসাতির যুগে রশীদ সাহেবের মত মানুষ গুলো কমে গেছে । পরিবারকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া অথবা তাদের কারনে অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে হতে পারে বলে রশীদ সাহেব বিয়েই করেননি ।

তার নারী আসক্তি নেই । তিনি নারী বিদ্বেষী নন তবে নারীকে মানুষের উপরে কোন মর্যাদা দিতে তিনি নারাজ। সবার জন্য আইন সমান হলে নারীকে “মা” কিংবা “দেবী” রূপে পূজা করার মধ্যে তিনি কোন মাহাত্ম্য দেখেন না ।যদিও বাজারে “প্রত্যাখ্যাত হইয়া নারীদের প্রতি বিরূপ “ গল্প চালু করার চেষ্টা আছে তার প্রতিপক্ষ উকিলদের , রশীদ সাহেব এই সব গুজব নিয়ে বিচলিত হন না । বন্ধুদের মত শেষ জীবনে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা রক্ষা করার জন্য রাজনীতিতে তিনি নামবেন না ।আর তাই , বাজারে নারী ঘটিত সুনাম বজায় রাখার দায় নেই। তবে এই ধরনের বদনাম নাকি রাজনীতিকদের এসেন্সিয়াল ক্রাইটেরিয়া হিসেবে মাজা'র জোরের প্রমান দেয় । পৃথিবী কি এতটাই বদলে গেছে ?

সামনের ফাইলটা ঘাটতে ঘাটতে রশীদ সাহেবের ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসির রেখা ফুটে ওঠে । কেউ জানুক আর না জানুক, তিনি খুব ভালো করেই বোঝেন , পৃথিবী এক পাও আগায়নি বা পিছায়নি। টানা ৩৭ বছর আইন ব্যবসা করে তিনি খুব ভালো করেই জানেন , ক্ষমতা ও টাকার কাছাকাছি থাকা সকল ব্যক্তিরই লৈঙ্গিক সততার অভাব আছে এবং অপরাধ করার ক্ষেত্রে নারী পুরুষের চেয়ে এক ইঞ্চিও পিছিয়ে নেই । কোন কোন মহিলার নৃশংসতার গল্প করে রশীদ সাহেব মাঝে মাঝে কোমল মতি তরুন উকিলেটদের রাতের ঘুম নষ্ট করে মজা পান। আবেগ দিয়ে প্রেম হয় , আর বিচার করতে লাগে ঠান্ডা , যুক্তিবাদী মাথা । এই জিনিসটা এই বাচচা ছেলে গুলো যত তাড়াতাড়ি বোঝে , তত মঙ্গল ।

এই কেসটার কথাই ধরা যাক। খুনের কেস। তবে যৌন নির্যাতনের পরে খুন। মোটিভ , ধৃত আসামী , খুনের আলামত , সাক্ষী সাবুদ , সর্বোপরি খুনীর জবানবন্দী পাওয়ার পরে শাস্তি বিধানের ব্যাপারে কোন দ্বিধা থাকতেই পারে না । এত সহজ কেসটা কেন নতুন পুঁচকে ছোড়াটা তাঁর টেবিলে পাঠিয়েছে , রশীদ সাহেব একটু অবাকই হন । অবশ্য এই কেস এর রায় দিতে গিয়ে বন্ধুবর বিচারপতি নাকি বিব্রত বোধ করেছেন ! নইলে এই সব ফালতু কেস নিয়ে রশীদ সাহেব আর আগ্রহ বোধ করেন না । টাকার পরিমান অকল্পনীয় রকমের বেশি হলেও । টাকার ধার তিনি জীবনেও ধারেন নাই । একা একটা মানুষের চাহিদা খুব অল্প । পৈত্রিক বাড়ি , ব্যাংকের এফ ডি আর , বিশ্বস্ত চাকরের হাতে চা আর স্টাডি ভরা বই । রশীদ সাহেব আসলে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশিই ধনী।

কিছুটা কৌতুহল আর বাকিটা তাচ্ছিল্য নিয়ে রশীদ সাহেব ফাইল পড়েন । বিচারপতি ফখ্রুদ্দিন এর “হ্যাডম” সম্পর্কে তিনি বিলক্ষন জানেন । ও ব্যাটা তো সহজে বিব্রত হওয়ার লোক নহে । খুন হয়েছে একটা মেয়ে । বয়স দেখা যাচ্ছে ১৪। জন্মসূত্রে আমেরিকান সিটিজেন । বাবা মাকে নিয়ে নিউইয়র্ক থেকে বেড়াতে এসেছিলো নানাবাড়িতে । গরমের ছুটি কাটিয়ে ফেরার মাত্র দুই দিন আগে নিজের বাড়িতে খুন হয়েছে । ধর্ষনের বা শারীরিক আক্রমনের আলামত পাওয়া গেছে শরীরে । স্তন এবং শরীরের কোমল জায়গা গুলোতে আচড় , কামড়ের চিহ্ন আছে । যোনীপথ ছুরির আঘাতে ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলা হয়েছে । কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, কোন সিমেন পাওয়া যায় নাই । যোনীপথের টিস্যু এমন ভাবে কেটে ফালা ফালা করা হয়েছে যে “ইন্টারকোর্স” হয়েছিলো কি না , ফরেন্সিক রিপোর্টে “ ক্যান নট বি ভেরিফাইড “ লেখা আছে ।

এই সবই হলো মৃতার প্রতি খুনীর ভয়াবহ আক্রোশের প্রমান । প্রচন্ড আক্রোশ ধর্ষন বা খুনের কারন হলে , যৌনাঙ্গ ক্ষত বিক্ষত করা দেহ পাওয়া যায় প্রায় ৯৯% ক্ষেত্রে । “ক্যাস্ট্রেশন “ মহিলা খুনীদেরকেও করতে দেখা যায় আক্রান্ত পুরুষের যৌণাঙ্গে । অনেক ক্ষেত্রেই হয়ত মহিলা সেই পুরুষের হাতে আগে কখনো যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন – এমন ইতিহাসই পাওয়া যাবে । পাতা উলটে সিমেন রহস্যের উত্তর মেলে । খুনী একজন মহিলা । সুতরাং , ইটস এ কেস অফ ম্যালিস । কিন্তু , রশীদ সাহেব চশমা খুলে ঘাম মুছতে শুরু করেন খুনীর নামটা দেখে । ১৪ বছরের কিশোরীর নামের সাথে মিলটা চোখ এড়ায় না ।খুনী মেয়েটির জন্মদাত্রী মা । তার চেয়েও বড় কথা , মহিলাকে রশীদ সাহেব চেনেন । মুক্তা ! এতদিন পরে !

Sunday, April 29, 2007

গনতন্ত্র , মানবাধিকার ও কমনসেন্স - কোনটা বাছবেন ? -১

গণতন্ত্র বলতে খুব সাধারন ভাবেই বুঝি , সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষের মতকে প্রাধান্য দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা । সাধারন ভাবেই ধরে নেওয়া হয় যে , সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষ যেহেতু নিজ নিজ কল্যান নিহিত আছে যেই সিদ্ধান্তে , সেই সিদ্ধান্তের পক্ষেই রায় দেবে , এবং , এভাবেই সংখ্যা গরিষ্ঠের কল্যান সাধিত হইতে পারে , এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে ।

গণতন্ত্রে সংখ্যা গরিষ্ঠ সাধারন মানুষের সাধারন কল্যানকামী বোধ বা কমন্সেন্সের উপর ভরসা করা হয় । এবং ধরেই নেওয়া হয় , বেশির ভাগ মানুষের বিরুদ্ধে যাবে, বা ক্ষতি হবে, এমন সিদ্ধান্ত মানুষ নেবে না। সব সময় তা ঘটে কি ?

মানবাধিকার বলতে মানবের অধিকার বোঝায় । সেই অধিকারটি যে কোন মানব মাত্রেই পাওয়ার অধিকার রাখেন। প্রাপ্য কোন অধিকারগুলোকে আমরা "মানবাধিকারের" সংজ্ঞায় ফেলবো , তা যুগে যুগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আন্দোলন ও সনদের মাধ্যমে আজকের "মানবাধিকার সনদে" পৌঁছেছে । আমরা সেই অধিকারে বলেছি , লিঙ্গ , ধর্ম, বর্ন , বয়স, জাতি, উপজাতি, ইত্যাদি ইত্যাদি - যা কিছু মানবের এ যাবতকালের ইতিহাসে "বৈষম্যের " জন্ম দিয়েছে বলে বেশির ভাগ মানুষ ভেবেছেন , সেই সবের উপকরনের ভিত্তিতে কাউকে "অন্য রকম ভাবে বিবেচনা " করা যাবে না ।

মানুষ হিসেবে সবাই সমান সুযোগ ও সম্পদ , সুবিধা ভোগ করবে ।অধুনা , বৈশ্বিক "কমনসেন্স " বুঝতে পেরেছে , সম্পদের সুষম বন্টন কখনো সম্ভব নয় । অতএব , এখন আর কেউ "ইকুয়ালিটির " স্লোগান তোলে না । বলে "ইকুয়িটির" কথা । [চলবে]

Saturday, April 28, 2007

ধর্ম , রাজনীতি আর বিভ্রান্ত বর্তমান প্রজন্ম -১

বাংলাদেশে ধর্মীয় রাজনীতি বা দাওয়াতের অস্তিত্ব অনেক আগে থেকেই । ইসলামী শাসন কায়েমের চেষ্টাও চলছে অনেক দিন ধরেই । আমি বলছি ১৯৫০ সালের কথা । তখন আমার আব্বু , নেহাতই স্কুল ছাত্র । ক্লাস করতে করতে দেখতেন “ইসলামী ছাত্র সংঘ “ নামে একটি সংগঠনের ছোট ছোট দল আসতো আব্বুদের স্কুলে। প্রতিটা স্কুলে স্কুলে গিয়ে তাদের ইসলামের দাওয়াত দেওয়া , ইসলামী রাষ্ট্রের গুনাগুন বর্ননা , ইসলামের ইতিহাস বর্ননা এবং ছাত্রদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া । এই ছিলো , “ইসলামী ছাত্র সংঘের” ভূমিকা ।

রাজনীতির সাথে জড়িত হওয়া বা শাসন তন্ত্র দখল করার কোন চেষ্টা কিন্তু তখন তাদের করতে দেখা যায় নি । জামাত ই ইসলামী ও তার অঙ্গসংস্থান ইসলামী ছাত্র সংঘ [ বাংলাদেশ হওয়ার পরে ইসলামী ছাত্র শিবির ] এর জন্মকাল থেকে আজপর্যন্ত ভূমিকা নিয়ে কোন পুংখানুপুংখ ইতিহাস পাই নি । এখনো খুঁজে চলেছি । এই দলটির উপর তথ্য সমৃদ্ধ কোন বই বা ডকুমেন্ট কারো জানা থাকলে আমাকে বলবেন ।

না পাওয়ার দুটা কারন অবশ্য পেয়েছি ।
১। প্রধান রাজনৈতিক দল গুলোর কাতারে জামাত ই ইসলামী কোন দিনই আসতে পারে নাই । দীর্ঘ সময় ধরে তারা রাজনীতির সাথে যুক্তও ছিলো না।তারা শুধুই ইসলাম কায়েমে ব্যস্ত ছিলো । অনেক পরে , বাংলাদেশ হওয়ার পরে , এরশাদ আমল এ তাদের সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যাওয়া শুরু হয়। এর আগেও তারা রাজনৈতিক কাজ যা করতো , নিরবেই করত।

২। জন লগ্ন থেকেই এই দলটি কাজ করে আসছে প্রায় নিরব , সিক্রেট সার্ভিস স্টাইলে । তাই দলের ভিতরে না থাকলে , দলের কর্মকান্ড সম্পর্কে জানা কঠিন। তাদের নিরব কর্মকান্ডের কারনে বাইরের সাধারন মানুষের কখনোই আগ্রহ তৈরী হয় নাই এই “ অগুরুত্বপূর্ণ” দলটির মাথামুন্ডুর খোঁজ নিতে ।

মনে হয় সময় এসেছে এই দলটির একটি নিরপেক্ষ ইতিহাস বের করে বিচার করার।
কারা এরা , কি চায় ?

Sunday, March 4, 2007

গান শুধু গান!

pranerManush.mp3




গান গাই আমার ম্ন রে বুঝাই , মন থাকে পাগল পারা
আর কিছু চায় না মনে গান ছাড়া , গান ছাড়া

Saturday, January 6, 2007

রাজনীতির ঈদ আর বদ্দার গরু

এবার ঈদে বদ্দা নাকি কিনছিলো এক গরু
আমার মত বেশালদেহী, তিনার মতন সরু।
সেই গরুতে ঘাস খাইতো কাঁটা চামচ দিয়ে
"ডাংকে" বলে উঠতো ডেকে পিওর ভদকা পিয়ে !
গরু আহা নধর শ্রী তার, দেখতে মৃদু কালো
টানা চোখে পড়তো ঝরে "গো"ণতান্ত্রিক আলো।
আহা গরু , বদ্দা এবং কসাই - সবাই মিলে
বসলো ঘিরে আগুন জ্বালা নিশিথ এক মিছিলে।
ভাবছো বুঝি গরুর সাথে আবার কিসের কথা?
এই গরু তো সেই গরু নয়, করবে যথা তথা !
জার্মানীতে গরু, ছাগল , ইস্কুলে যায় সবে
তা না হলে মহাযুদ্ধে কেমনে সেরা হবে?

গানবিকের রীতি নীতি মানবিকের বড়
গোল টেবিলে বসার আগে হয় না নড় চড়।
কোন খানে তার ঢুকবে ছুরি , কেডায় নিবে ছাল
চুক্তি করে গরু মশায় সাক্ষরিবেন কাল
আজকে তাহার সহিত আলাপ , মেনুতে রাজ হাঁস
এমন যদি হইতো আহা বাংলাদেশে ।"কাশ!"
[ বুকের মাঝে যায়রে বয়ে দারুন দীর্ঘশ্বাস ]

আমরা সবাই কুরবানীতে যাইবো হাটে হাটে
দেখবো কেমন স্বাধীনতার সূয্যি গেছে পাটে
দেখবো কেমন কসাই মোদের থোড়াই কেয়ার করে
চালায় ছুরি ভোটের দিনে , এবং আগে -পরে ।

আমার বুকের ভালোবাসা, স্বপ্ন, পেটের পিলায়
লাথ মেরে যায় এই পৃথিবীর বদ্দা অবলীলায়।
বৈঠকে নাই, গোল কি তেকোন, সবাই মিডিয়াতে
জানতে পারি , "কে কতটা সফল হলাম" রাতে !
[ বাক্স গুলোর আহ্লাদিত বুলেট-ইনের সাথে ]

আমি তো আর বিদ্বান নই, যে যেভাবে পারে
সামনে দিয়ে , পিছন দিয়ে, ভারে নয়ত ধারে!

ও বদ্দা , আজকে তোমার গরু হবার খায়েশ !
নিজের দেশে বুকের রক্তে স্বাধীনতার পায়েশ
খাইলো চেটে ৭১ এ যারাই শত্রু ছিলো
পতাকার ওই লাল রঙে বিষ , তারাই ঢেলে দিলো !


আজকে আমি গরুও নই, রামছাগলের ঘরে
জন্ম কি আর দেব মানুষ ! হাজার বছর ধরে
যেই বাঙালী পুজলো নিজে সত্য , ন্যায়ের পথে
লড়লো , মরলো , জীবন দিলো স্বাধীনতার রথে
সে রথ চালায় কসাই আজকে , আমার সঙ্গে আমি
মাও আজকে বান্ধবী আর বাপ আজকে স্বামী!!!

দুর্বিনীত আমার বুকে তাও জেগে রয় আগ
সূচ হয়েছি , ফালও হবো , জমছে নিরব রাগ ।
লাখে লাখে মারছো গরু, তারাও লিখে রাখে
কে কতটা মারলো , কাটল - পদ্মা মেঘনা বাঁকে !
একদিন এই গরু গুলোই ছুরি , দায়ের কোপে
মারবে কসাই , ছিলবে মশাই, যাইবে বদ্দা লোপে ।

বদ্দা গিরি আর কত দিন? সময় সমাগত
"গোকূলে বাড়ে" তোমার খুনী , নিরব , শত শত !
ঢাকা
১লা জানুয়ারী ২০০৭

অনু কবিতা

ফুটতো যদি তোমার ঠোঁটে হাস্নুহেনা
ভ্রমর হয়ে নিতাম লুটে মধুর দেনা
চোখ গুলোতে ফোটাও যদি শাপলা শালুক
পুকুর চোরই হতাম আমি বুঝলে বালুক?
তোমার গালে শ্যামল বরণ সূয্যি জ্বেলে
পোড়াও কেনো আমায় এমন হিম অনলে?
তোমার চুলে কাঁধ ছোঁয়ানো পেতেছো ফাঁদ
হাত বাড়ালেই কেন যে হও নিষ্ঠুর চাঁদ!
আমার দোষ ? তোমায় যদি ভালো লাগে?
অন্ধকারের একলা রাতের আলো লাগে?
তোমার জন্য কষ্ট পেলে কি আর করা !
ভালোবাসি, কলঙ্ক তাই কপাল ভরা !
ভয় পেলে কি ভালোবাসায় হতাম নত?
পাই আর না পাই, বাসবো ভালো অবিরত !
২রা জানুয়ারী ২০০৭

ঢাকা

কবি ও কবিতা !

তীব্রতমের হাত ধরে হেঁটে যায় কোমল আর্তনাদ
রোদেলা দুপুরে কুয়াশা ভাবে মেয়েটাই উন্মাদ
তবু নীলাকাশ গাঙচিলের কালো ডানা ছুঁয়ে দিলে
গণগণে সন্ধ্যায় লুকানো চাঁদ তারার মিছিলে
তুমিও একেলা থাকো , প্রিয়তমার ডান পাশে
জোনাকিরা কয় না কথা তোমার ধুসর আকাশে
উন্মোচিত চিলেকোঠায় ধুলার বাসর গোঙানি
বাম পাশেই দেখো আমূল ধর্ষনের হাতছানি
পিয়াঁজের সাত সতেরো বাকলে বিকাল নামে যদি
আমিও কবিতা দেবো জাহান্নামের দরজা অবধি!

তোমাতেই মগ্ন ভগ্ন হৃদয়

মুছে যাচ্ছে একে একে সব অংশীদারিত্ব, নিষ্ফল অনুতাপ।
[এমনকি ঈশ্বরও সহ্য করেন না শিরকের পাপ]

মুছে ফেলছি তাই অতীত ও বর্তমানের প্রিয়মুখ গুলো, অন্যান্য!

অপরাধ? কিছুই নয়। সামান্য!
তারা তোমার মতই কেবল পুরুষ।

শুধুই বন্ধু ভাবে।
ভালবেসে অপরাধ করেনি।
তবু, চলে যেতে হবে।

প্রেমে কোন তৃতীয় মাত্রা থাকতে নেই , ছায়ার মত।

ধীরে , অতি ধীরে তাই মুছে যাচ্ছে
শর্তহীন, প্রাপ্তিহীন, অভিযোগহীন সম্পর্ক যত।

আর একটু একটু করে স্পষ্ট হচ্ছো তুমি!

একটা দু'টো তীব্র থেকে তীব্রফুটছে ক্যাকটাস
শিহরিত মরুভূমি।

রাত আর সূর্যালোকিত ভোরের মাঝামাঝি
কোন আলো ছায়া ক্ষন আর নেই
আলোহীন অন্ধকারে তুমি বড্ড আলোকিত মুখ
আমার সুখ সুখ প্রচন্ড ভাঙন অবিরাম চলছেই!

আর সব শব ভাস্কর্য বা সম -ভোগহীন ছেনি, হাতুড়ি, বাটাল,
একে একে নিস্তব্ধ মুগ্ধ মিস্ত্রির দল।

ওরা শুধুই বিষন্ন দর্শক আজ
কি নিপূণ তুমি গড়ে চলেছো তোমার রাজ্যপাট!
অধিকারের সুতীব্র অহংকার তোমার প্রতি আঘাত।

কবিতা আমার, গদ্য আমার,
ভবিষ্যতের উঠোন , বারান্দা , শোবার ঘর-
বইয়ের ভিতর ও বাহিরের আমার প্রতিটা অক্ষর
আজানুলম্বিত চুলের ছটফটে রং , আর
চমকে হঠাৎ নামিয়ে নেওয়া লাজুক প্রত্যয়
কবির লেখা " রোমাঞ্চিত যমুনা আমার"
থর থর কেঁপে যাওয়া আকুল কোমল হৃদয়,
সব তোমার দিকেই হাটি হাটি পা পা
[ তুমুল বাড়ছে তোমার আলিঙ্গনের পিপাসা]

এতদিন পরে এতটা পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ
সম্ভব কি আজও!!!

আমি হেরে গেছি
এই শহরের কাক, পক্ষীও জানে।
তুমি কি নেবে না বুঝে
তোমার বিজিত সাম্রাজ্য?

তোমার আগে পরে

তোমার আগে, মৃত্যু ছিলো আকাঙ্খিত
তোমার পরে , মৃত্যু মানে শান্তি
মুদ্রাস্ফীতির নোংরা, কালো যুগে
ভালোবাসার দামটা যদি জানতি!