যেভাবে সংখ্যা পেরিয়ে
শূন্যের দিকে যাওয়া যায়
সেভাবেই যেতে চাই
স্লেট থেকে সব মহৎ অংক মুছে ফেলে
কোন নদীর দিকে যেতে চাই !
তীব্র অপরাধ বোধে সারা রাত নির্ঘুম কেটে গেলো । বরিশাল যাওয়ার বিনা মেঘে বজ্রপাত ধরনের নির্দেশ এসেছিলো । স্রেফ ৫ মিনিটের নোটিশে সিদ্ধান্ত নিতে হবে , যেতে হবে রাতের ভিতর । কিন্তু যাওয়া হলো না। অথচ এই যাওয়ার জন্যই অপেক্ষা করে আছি ক'দিন ধরে । সারা বিকাল ছটফট করতে হলো অক্ষম হাত দুটোতে মোবাইল জড়িয়ে ধরে , অন্য কাউকে খুঁজে । পেলাম , শারমিন যাচ্ছে আমার জায়গায়। আমার যেতে আপত্তি ছিলো না । কিন্তু অসুস্থ ৭৪ বছরের পিতাকে সম্পূর্ণ একলা রেখে বরিশাল চলে যাওয়াটা আরেক অমানবিক কাজ হতো । তাকে এক বেলা একা রাখা যায় । তা'বলে সাত দিন? অসম্ভব । এক্সিডেন্টের পরে হাসপাতালে থাকা গেলো না , ব্যথা নিয়েই অফিস -বাসার দায় দায়িত্ব স্বীকার করে উঠে দাঁড়াতে হলো , হাঁটতে হলো হাসিমুখে (কিচ্ছু হয়নি , হাঁটতে পারবো , নো প্রবলেম) - তখনো এতটা খারাপ লাগেনি । নিজের শরীরটাকে কেটে ছিড়ে পুড়িয়ে ভাগাড়ে ফেলে রাখতে আমি ওস্তাদ । ব্যথা এত সয়েছি , এখন আর কষ্টকে কষ্ট মনে হয় না । মনে হয় স্মৃতি রোমন্থন। শরীর সয়ে গেছে আমার । কিন্তু এই মানসিক যন্ত্রনা থেকে বের হতে পারছি না । কত গুলো শিশুমুখ আমাকে বার বার ডাকছে । আমার কি ওদের প্রতি দায়িত্ব ছিলো না? উফ, এই সময়টাই কেনো একলা আমি। এত এত একলা । কেউ নাই , আমি ছাড়া , কোথাও কেউ নেই । সমস্ত দায় ভার , অক্ষম কাঁধে আবার!
জলের মত জটিল ছিলো দিন
জলের মত গড়িয়ে গেলো জলে
চোখের জলে বেড়েই ছিলো ঋণ
ছোঁয়নি যখন তোমার করতলে !
বাধ্য হয়েই পেপার পড়তে হচ্ছে আবার । দেশটাকে বিষাক্ত অর্গলে দমবন্ধ হতে দেখছি প্রতিনিয়ত। দেখতে ইচ্ছে করছে না। চোখ বন্ধ করে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের বাইরে ভাবতে ইচ্ছে করছে না । কষ্ট হচ্ছে খুব । কিন্তু চাইলেই কি অন্ধ হওয়া যায়? চাইলেই কি এড়ানো যায় প্রলয়? রাজনীতি , অর্থনীতি , সমাজ সংস্কৃতি - সকল অঙ্গনে চলছে সাদা চুনকাম। তবে তাতে ভন্ডামি এত বেশি যে মুখে চুন লাগিয়ে কাম কেলী ছাড়া আর কিছু হচ্ছে বলে তো মনে হয় না । সামরিক ধর্ষনজাত জারজ গণতন্ত্র শেষকালে কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না । জন্মনিয়ন্ত্রনের মত দুর্নীতি নিয়ন্ত্রনের প্রাকৃতিক পদ্ধতি শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের পরিবার পরিকল্পনা করে ছেড়েছে । বাস্তব জ্ঞান না থাকলে যা হয় । পরীদের কল্পনা করেই কাটাতে হচ্ছে । বাস্তবের পরিবার লোপাট ! দেশ চালানো আর যুদ্ধক্ষেত্র কি এক? নিয়ন্ত্রন আর নিয়মকানুন দরকার আছে । দরকার শাস্তি ব্যবস্থা ও । কিন্তু টুপিধারী দাড়াল আর তাদের বৈদেশী নাগরদের পদলেহন করে প্রলয় ঠেকানো যাবে না । যাবে না কারন ১৪ কোটি ভুখা পেট খাবার ছাড়া আর কোন নিয়ম মানবে না । বাজারে গেলে দমবন্ধ হয়ে আসছে ।
শহর ছেড়ে চলো এবার চলো গাঁয়ে
গাঁয়ের শুরু তোমার পায়ে পায়ে ।
স্বাধীনতা যুদ্ধে আপাত জিতে যাওয়ার পরে আমরা গ্রাম ভুলে থেকেছি । করেছি ঢাকার উন্নয়ন। আর শিয়ালে শকুনে দখল করে নিয়েছে গ্রাম। আমাদের অবহেলা এবার চারিদিক থেকে গিলে খাবে আমাদের । আত্মধ্বংসী এই প্রক্রিয়াটিকে বিপরীত মুখী না করতে পারলে আর একতা আশা করে লাভ নেই । বহুবার প্রতারিত করেছি আমরা সবুজ বাংলাকে । আজ সেই সবুজ নিয়েছে সামরিক আর জঙ্গী উর্দির জমিনে আশ্রয় । আমার নিজের দোষ । শোধরানোর পথ খুঁজছি ।
কবে শেষ হবে
এই সব মোটামুটি মরে বেঁচে থাকা?
অসময় খামচে দিলে
উড়বে কি স্বপ্নের ভীরু পাখা?
No comments:
Post a Comment