Thursday, January 31, 2008

প্রতীক্ষীত ট্রেন

তোমার কবিতার ট্রেন ছেড়ে গেছে কবেই
সমান্তরাল পথ ঘেষে না ছুঁয়ে পাশাপাশি

এখনো বেলঘোর স্টেশনে দাঁড়িয়ে আমার শব্দের বিরহ

দুঃখেরা চৌকাঠ পেরিয়ে আসে রোজ রাতে
শুধু ভালোবাসাটুকুই পায় না টিকেট ব্ল্যাক মার্কেটে

তোমার কবিতার ট্রেন ছেড়ে গেছে কবেই
আমি কখনো দরখাস্ত লিখি স্টেশন মাস্টারের পদে
ভুল করে যদি নিয়েই ফেলে
একদিন ঠিক লাল রঙে থামিয়ে দেবো তোমার চলে যাওয়া

তোমার কবিতার ট্রেন ছেড়ে গেছে কবেই
কাউকে তো থাকতেই হয় অপেক্ষায় ... ... ...

Tuesday, January 29, 2008

অনাঘ্রাতা

আমি তোমাকে কাছে থেকে দেখতে চাই ।
খুব, খুউব কাছে ।

শুনেই পুরুষ সরায় তার দেহ আচ্ছাদন।
পরিচিত অপরিচিত নগ্নতা
তার রুপ সম্ভার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে নির্বোধ সৌন্দর্য্যে ।

আমি নির্লোভ হতাশায় নয়ন লুকাই অপমানিত বুকে।
দু'ফোটা জলের পর্দা টানি আমাদের মাঝে ।

ও কি বোঝে না ?
মেঘ সরিয়ে নিলে আকাশ হয়ে যায় "মহাশূন্য" !

Saturday, January 26, 2008

ঘষা কাঁচের জীবন

ঘষা কাঁচে জীবন দেখি আজকাল
দুঃখ গুলো তাই ম্যাগ্নেফায়েড

আচ্ছা , ম্যাগ্নেফায়েড মানে কি ?
মেগা স্টারদের মতো ঝলমলে দুঃখ ?
ম্যাগনামের মত অতর্কিত ?
ম্যাগ্নেটের মত বিপ্রতীপ আমাকে ছেড়ে যাবে না কখনো !

আমার উত্তর মেরুতে তোমার নিরাপদ আশ্রয় ।
"আমি উত্তর" জীবনে তোমাকে কাছে পাবো নিশ্চয় ।
সেখানে তুমি নাজুক বিশ্বস্ততায় বলবে ভালোবাসার কথা ।
দক্ষিণে ঝুঁকে আমার কবিতার স্থায়ী নিরবতা ।

বয়সী চশমায় পুনরায় রায় কবে না?
মেয়েটা বোকা ছিলো , বোঝেনি "হবে না"।

ঝুলে যাওয়া চামড়ার ভাঁজে বসে যাওয়া ধুলো
সাক্ষী দেবে আমার অপমান , মেয়েলী ভুল গুলো
সেই যে পায়ে হেঁটে তোমার বাড়ি যাওয়া
সেই যে রাতের পর রাত শুধুই জেগে থাকা
সব হারিয়ে দিনকে দিন দুপুরে না খাওয়া
ভুলে গিয়েও বুকের ভিতর তোমায় ধরে রাখা !

তুমি কি আজ জানালা খুলে বৃষ্টি দেখছো প্রিয় ?
একটু তোমার কার্নিশে কি জল জমেছে রাতে ?
সে কার্নিশে আমার মুখটা পড়েই যদি ধরা ,
একটু তোমার পড়বে মনে ? "যেই মেয়েটা মরা"।
ঘষা কাঁচের আয়নাতে কি কষ্ট থাকে বাঁধা !
আমার নয়ন দেখছে শুধুই শূন্য , ম্যাগ্নেফায়েড !


( কষ্টেও কি ছন্দ থাকে ? ছন্ন ছাড়া শব্দ বাজার
গদ্য দিয়ে হয় যে শুরু , তাও দেখি তাল দিচ্ছে হাজার)

Wednesday, January 23, 2008

এলোমেলো আজকের আমি - কষ্ট পাচ্ছি

অফিসের ফাইল গুলোকে ফর্দা ফাই করা আজকের প্রথম কাজ । তারপর আবেদন পত্র দুটো পাঠাতে হবে। আর বাচ্চাদের জন্য "অভূতপূর্ব " স্বাস্থ্য কার্যক্রমটা পুরো পুরি নিজের মাথা খাটিয়ে তৈরী করা । আলহামদুলিল্লাহ! কাজ জমে গেছে অনেক এত দিনে। ব্লগিং এর ফল । :(

বন্ধু ব্লগারদের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে এই অবস্থা । আন্দোলন এর আগে থেকেই যাই যাই করছিলাম । ( সে তো কবে থেকেই করছি) । তবে পর পর দুটো বিশাল আঘাত মনে করিয়ে দিলো "কেউ কারো নয়" । ঠিক । কেউ আমার তো নয় , আমি ছাড়া । সুতরাং আমার এখন আমার নিজেকে বাঁচানো দরকার । মরতে বসেছি। একটা অফিসে । একটা বাসায় ।

কিন্তু ব্লগ নিজেও কম আঘাত করেনি । অনেক গুলো মানুষকে ভীষন বিশ্বাস করে তাদের জন্য অনেক অপমান, কষ্ট , গালি গালাজ সহ্য করেছি । সবার উপরে বাংলাদেশ আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় । এই দেশটার জন্য আমার পরিবার কম ত্যাগ সহ্য করেনি। দাদু বাড়ি এবং নানু বাড়ি - দুই দিকেই অগণীত মুক্তিযোদ্ধা । মামারা যুদ্ধে গেছেন বলে নানাকে মেরে ফেললো । আব্বুর জন্য চাচাকে । যুদ্ধ করতে করতে মারা গেলো কতজন! এই বিশাল দুটো পরিবারের শাখা প্রশাখা তছনছ হয়ে গেছে । ছোট ছোট বাচ্চা গুলো অকল্পনীয় কষ্টে, দারিদ্রে, বাবার স্নেহ বঞ্চিত হয়ে বড় হলো । সেই দেশটাকে জামায়াত - শিবির- নিওরাজাকারদের হাতে চলে যেতে দেখছি প্রতিদিন! ভিতরটা দুমড়ে মুচড়ে যেতে থাকে প্রতিক্ষণে । বাস্তবের মাটি , ১৫ কোটি মানুষকে তো রক্ষা করতে পারছি না। কিন্তু , ব্লগের ভার্চুয়াল মাটিতে অন্তত এই শিয়াল, শকুন, বরাহ , নেকড়েদের একটা মাইরের উপর রেখে বুঝিয়ে দিতে ইচ্ছে করে - এত সহজ নয় দখল । যতদিন একজনও বাঙালী থাকবে, ততদিন ঐ "বিদেশী প্রভুদের" পদলেহন করে , ওদের টাকায় , ওদের দেওয়া কৃত্রিম নিরাপত্তা , সমর্থন নিয়েই থাকতে হবে তোদের ।

সুযোগ এবং শক্তি ফিরে পাওয়া মাত্র বাঙালী আবার তোদের কবরে পাঠাবে। সেই ৭১ এর মত । নাহ, কি লিখতে বসে কি লিখছি! আবেগ বড় এলোমেলো খেলছে । নাহ, আজ আর লিখবো না । কাজ করা দরকার। শুধু এইটুকু জানিয়ে রাখি । ব্লগে যারা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে গলায় রক্ত তোলে, তাদের আসল রুপ আমার সামনে তুলে ধরা হয়েছে ! আমি হতভম্ব ! এ আমি কাদের জন্য লড়ছি? কাদের সাথে লড়ছি?

ছিঃ ছিঃ ছিঃ !

কোথায় আমার সর্বজন শ্রদ্ধেয় বাবা, মামা, চাচা, খালামনি , মামনি ! আর কোথায় এই সব ইতর জানোয়ার ! শিক্ষা বা রুচি - কোনটাই কোন দিন পেয়েছিলো কিনা সন্দেহ জাগে। আদর্শ ? নীতি ? ন্যায় ? সততা? কোথায় এই সব ! কিচ্ছু নেই । সবটাই "নোংরা মজা নেওয়া "। শয়তানি করা । আর এই শয়তানির আনন্দ পাওয়ার জন্য "মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার " । "স্বাধীনতার পক্ষে আছি" - স্রেফ এই ঢাল ব্যবহার করে সব কিছু করা যায়? অন্তত , সেই রকমই প্রমান পাওয়া গেলো । কেউ করছে , আর বাকিরা হাতে তালি দিয়ে মজা করছে । ছিঃ ।

রাজাকার গুলা এই সব করে । আমি ওদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশাও করি না । ইবলিশ তো ইবলিশের কাজই করবে । কিন্তু , যারা মানবতা, সাম্য, সততা, ন্যায়ের জন্য লড়ে - তারা এই রকম করবে কেন?

আমার যুদ্ধ তাই বলে থামবে না । তবে , আপাতত "স্থগিত"। নোংরামি করে ওরা কতদুর যেতে পারবে , আমি জানি । নোংরা পথে কোন দিন মহৎ কিছু অর্জন করা যায় না । জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেম, ধর্মনিরপেক্ষতা আর সামাজিক ন্যায়বিচার, সাম্যের উপর দাঁড়ানো একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র !

এই না আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ!

আদর্শহীন মানুষ দিয়ে এইটা অর্জন হয় কি করে? একে অন্যের উপর কিংবা চতুষ্পদী জন্তুর মত সারাক্ষন উপগত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে স্বাধীনতার সম্মান রক্ষা হবে! হায় রে !

আমি খুশি আমার মুক্তিযোদ্ধারা কবর থেকে এই সব দেখছেন না । দেখলে , এই সমাজ, এই রুচি, এই ন্যায়বোধ , এই শিক্ষা , এই সম্মানবোধের জন্য প্রান দিয়েছেন ভেবে হয়ত আত্মহত্যাই করতেন আবার!

আমার বাংলাদেশ , তাজিয়ার মিছিলে এখন আর হায় হাসান , হায় হুসেন না - হায় বাংলাদেশ বলে হাহাকার করে মন!

আজ কাল পরশু

এখন আর লেখার জায়গা না । লেখা লেখি ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টায় আছি । অথবা বলতে পারি লেখালেখি এত বেশি জায়গা নিয়ে নিয়েছে জীবনের আর জীবন হঠাৎ এত প্রচন্ড ভয়ংকর সব মোড় নিচ্ছে , আমি আসলে চেষ্টা করছি , সব কয়টা অংশকে একত্র করে একটু গুছিয়ে নিতে । মাঝে মাঝে ছেড়ে দিতে হয় । পরিচিত সব কিছু । কাজ কর্ম, বন্ধু , পরিচিত অলি গলি । স্রেফ পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার যুদ্ধ । বরাবরের মত আমি একলাই লড়ে চলেছি । বাড়ির অবস্থা কেমন বলে বোঝাতে পারবো না । যারা একা একা থাকে , অথবা, যাদের পরিবারের সদস্যরা মৃত্যু বরণ করেছেন , তাদের সাথে মিল খুঁজে পাচ্ছি । এত কিছুর পরেও হাসিখুশি থাকার প্রানান্ত প্রচেষ্টা ।

হোক। অসুবিধা নাই । লড়তে লড়তেই তো বড় হলাম। এই রকমই তো চলছে সেই কবে থেকে । তবে খারাপ লাগে , আমাকে সব সময় কেন একাই লড়তে হয়? অথবা কে জানে! সকলেই হয়ত শেষ পর্যন্ত ভীষন একা। আব্বু ভালো নেই । সারাদিন একা একা বাসায় মানুষটা পাগল হওয়ার দশা । আমি তো কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছি সেই কবে থেকে ! কারো সাথেই কাজের বাইরে কোন কথাই বলি না । আবার নিজেকে বদলে দেওয়ার প্রয়োজনটা অনুভব করছি । নতুন করে কথা বলার শুরু । দুরত্ব যেটা নিজে থেকেই তৈরী করেছিলাম সবার সাথে , এখন নিজেই সেই দুরত্বকে কমানোর কাজে নামতে হচ্ছে । ফেরা কি যায় আসলে? সবটুকু যায় না বোধ হয় । আমি যা হারিয়েছি , সেটা হারিয়েই গেছে । এরপর যা হবে সবটাই দায়িত্ববোধ । কি নাম দেব এর ? ভালোবাসা ? কর্তব্য? ভন্ডামি?

নামে কি আসে যায়?

সবটাই জীবন , তাই না? সবটাই জীবন ।

সবটুকু নিজেকে জবাই করে দিতে হচ্ছে । আমি হাসি মুখে বলেছি বিসমিল্লাহ! এবার তাহলে এসো , রাগ ইমনকে মাটিতে ফেলি, বুকে পা দিয়ে দাঁড়াই আর তারপর "কুরবানী কুরবানী কুরবানী"। :)