Monday, December 10, 2007

একান্ত ব্যক্তিগত মতামত - সিডার আর ত্রান তহবিল

ব্লগে ত্রান পাঠানোর উদ্যোগের সাথে সেভ দা চিল্ড্রেনের অতি পরিচিত লোগোটা ঝুলতে দেখছি । গত দুইদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টানা কাজ করা হয়েছে । এই গতকাল রাতেও তিনটার সময় এয়ারপোর্ট থেকে কম্বল ইত্যাদি নন ফুড আইটেম রিসিভ করে দুর্গত এলাকায় পাঠানো হলো । সুতরাং , এস এম এস সিস্টেমে কোথায় কি ভাবে ত্রান যাচ্ছে , সেই ত্রান নিয়ে কে কি করবে , কিছুই জানি না। মাত্রই জেনেছি সেভ দা চিল্ড্রেন ( ইউ কে) এর সাথে বাঁধ ভাঙার আওয়াজ মিলিত উদ্যোগে এই কাজটা করছে । ভালো উদ্যোগ । এবং এটা নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়ে গেছে । সত্যি কথা হলো আমার কম্পিউটার জ্ঞান , এস এম এস পাঠানো ইত্যাকার কাজের অপারেশন কস্ট , ওয়াগারা ওয়াগারা কিচ্ছু জানা নেই । সুতরাং গ্রামীন আর সামহোয়ার ইন কি করছে , আমি কিচ্ছু বুঝি নাই । কিন্তু সেভ দা চিল্ড্রেন সম্পর্কে আমি জানি । কি করছে , কি ভাবে করছে এই গুলো আমার জানা । কিছু ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হতে পারে । তাই কিছু ব্যাপারে মানুষের ধারনা পরিষ্কার থাকা দরকার। বাংলাদেশে সেইভ দা চিল্ড্রেন এর ইউ এস এ, ইউ কে , অস্ট্রেলিয়া , সুইডেন এবং ডেনমার্ক কাজ করে । সেভ দা চিল্ড্রেন এলাইএন্স হলো প্রায় ২৯টা দেশের ২৯ টা আলাদা আলাদা সেভ দা চিল্ড্রেন নামক সংস্থা যারা এখন মিলিত ভাবে কিছু "কমন" নীতি এবং এথিক্স মেনে কাজ করে । এর ভিতর উল্লেখিত পাঁচটা মেম্বার সংস্থা বাংলাদেশে কাজ করছে । প্রত্যেকের অফিস আলাদা । অপারেশন আলাদা । ফান্ড আলাদা । তবে , ন্যাচারাল ডিসাস্টারের মত বিশাল ঘটনায় সেভ দা চিল্ড্রেন চারটা অফিসই একসাথে এবং "ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যনেজমেন্ট ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হিসেবে " বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য সংস্থাদের সাথে নিয়ে সমন্বিত এবং সম্মিলিত উদ্যোগে কাজ করে। সিডারের বেলাতেও তাই করছে । এখানে একটা ব্যাপারে নিশ্চিত করা দরকার । সিডারের খবর পাওয়া মাত্র সেভ দা চিল্ড্রেন ৪৮ ঘন্টা আগে থেকেই সম্ভাব্য দুর্গত এলাকা গুলোতে কাজ করতে শুরু করে । আর ফান্ডের জন্য বাংলাদেশের নাগরিকদের এস এম এসের উপর সেভ কোন ভাবেই নির্ভরশীল নয় । ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের জন্য নিজ নিজ সরকার আর রিসোর্স থেকে ফান্ড নিয়ে কাজ করছে সেভ । যারা ডোনেট করতে চান , সেই সব বিদেশী নাগরিক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অন লাইন ডোনেশন ব্যবহার করেন । তবে নীতিগত ভাবে স্বাভাবিক সময়ে ( ন্যাচারাল ডিজাস্টার বাদ দিলে) সেভ যেই দেশে কাজ করে , সেই দেশের নাগরিকদের কাছ থেকে ডোনেশন নেয় না । ( কই এর তেলে কই ভাজা নিষেধ ) সিডারের ক্ষেত্রে যেখানে কোটি কোটি টাকার খাবার , পানি , ওষুধ , কাপড় , কম্বল, ওরস্যালাইন , গৃহ নির্মান সামগ্রী লাগবে , সেখানে এস এম এস এর জন্য কে বসে থাকবে? তবে , এভ্রি বিট হেল্পস । যারা দুই চার টাকা খরচ করে সহজ উপায়ে ঘরে বসেই সাহায্য করতে চায়, তাদের জন্য একটা সুযোগ হয়ত মোবাইল কোম্পানি গুলো ( এবং সামহোয়ার) করছে । মনে রাখবেন , এই সব কোম্পানি হচ্ছে সব "ফর প্রফিট " অর্গানাইজেশন । কিন্তু সেভ বা অন্যান্য এন জি ও - "নন প্রফিট " অর্গানাইজেশন । কাজের ধরন , অপারেশন মোড , লাভ লোকসানের হিসেব --- একটার সাথে আরেকটা মিলবে না কখনো । এই উদ্যোগে সেভ এর ত্রান এবং এদত সংক্রান্ত কাজে এমন কিছু উনিশ বিশ হবে না । আমি যেটা বুঝেছি , নতুন করে কোন সিস্টেম না বানিয়ে সেইভ এর অন লাইন ডোনেশন সিস্টেমটাকে খুব সম্ভত কাজে লাগানো হচ্ছে । খোঁজ নিয়ে জানতে পারলে জানাবো । সবচেয়ে বড় কথা , আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে সাহায্য পৌঁছালেই হলো । একটু আগে ক্যরোলিনা , ইউ এস থেকে খালাত বোন খবর দিলো ওদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরা টাকা উঠাচ্ছে । এই রকম ছোট ছোট ব্যক্তিগত উদ্যোগের মতই একটা উদ্যোগ এই সামহোয়ার -গ্রামীন - সেভ । সিডারে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য সকলের উদ্যোগ সফল হোক ।

জাগরন ক্যাম্পেইনের ঘুমাইয়া যাওয়ার পেইনফুল সমাধান !

দিন কাল খারাপ । যে রাতে মোর দুয়ার গুলি ভাঙলো ঝড়ে গানটা শুনা নিষেধ । যেদিক তাকাই , খালি মন খারাপ করা খবর । তার ভিত্রেই চামে চুমে মুন ভালো করার চিষ্টা কইরা যাইতেছি । সেইটাতে কারু ত্রান মূলক সাহায্য পাওন যাইতেছে না । সকলে মিলিয়া পণ করিয়াছে , আমারে যেমনে পারুক , কান্দাইবো । কি আর করুম। কাম ও আকামে ব্যস্তু আচি । দিন ভইরা রিলিপের গপ মনিটর করি । কার কি লাইগবো , সেইডার যোগাড় যন্ত্র করি। রাত জাইগা পেলেনের থন রিলিপ নামাই । ভুরের বেলা সবাই বাথুরুমে যাওনের আগে বরিশাল পাঠাই । এই তো লাইফ , এক্কেরে জীবন হইয়া গেলো । লাস্ট ৪৮ আওয়ার্স ছিলাম ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট ওয়ার্ক শপে । আপিসে আইসা দেখি , আমার সাধের কফির মাগ ভাঈঙ্গা লাইসে । আর টেবিলে পাহাড় সুমান উঁচা কাম। টেলিফুনে আমারে বিছ্রাইতাছে বেনামী সব নাম । মাঝে দিয়া আমার হইসে অনেক ইলজাম। ইলজাম ছুটানির লাইগা কচ্ছপের মত ঝাপাইয়া পড়লাম কামে। কিন্তুক টাইপাতে গিয়া দেখি হাতে বেদনা। লিখতে গ্যালেও বেদনা । এমুন কি , টাকার বিলে সাইন করতে গিয়াও বেদনা ! এ কি রে ! পেট ফাইটা কান্দন আইলো । আমি বিয়া করি নাই বইলা আমার এত্ত শাস্তি ? ক্যান? দুনিয়ায় কি সবাই বিবাহ করে ? জব্বার ভাই দেখি আইসা ঝাড়ি লাগাইলো । নাহ, বিয়ার লাইগা না । কিডা কিডা বুলে আমারে সালাম দিসে । আমিও ওয়ালাইকুম তফাত কইয়া ডুব দিলাম । আপিসের পুলিট্রিক্সে আমার পুলি আমি দূরে রাকি। লাইফ ইজ এ কমেডি । আই ওয়ানা লাফ ইট এওয়ে । আজাইরা কামে লাফ মাইরা পরে দুষ্কের গজাইরা গীত গাওনের কাম নাইক্কা । বসে চার্কি ছাড়সে । আরেক বসের লগে গুন্ডগোল । আমার কি? আমি কলা খাই । কলাতে পটাশিয়াম আচে । ব্লগাইতে আইয়া দেহি হাসিবে হাসুনির মায়ের নামে বিচার দিসে । নটি বয় । এক্কেরে নেটি পুলা। হাসুনির মায়েরে আমি বিলক্ষন চিনি। কত ডেট কর্চি । তাই একখান তেব্র পেরতিবাদ লিখলাম। আবার ও বেদনা । নাহ , এইবার চউখ দেওনই লাগে । তাকাইয়া দেহি হাতের আঙ্গুল ফুইলা কলাগাচ হইসে । আমি তো পাংখা ! এই বকরী ঈদে তাইলে মধুচন্দ্রিমা যাওন কনফার্ম। আঙ্গুল ফুইলা কলাগাচ মানে অনেক টাকার মালিক হওন-- মেয়েবেলার সমইস্ত ব্যা করন ভুলা গেলেও বাট কিন্তু এইডা ভুলি নাই । এই বার ঝড়ে সব বকরী দেহ রেখেছেন । ( তেন ঠাং চাড়া ) । সুতরাং ঢাকায় থাইকা ফায়দা নাই । সিকিম যাওয়া যাইতে পারে । মাগার এত ব্যথা কেলা ? আইজ কাইল নিজের সম্পর্কে অনেক কিছুই খেয়াল থাকে না । সব ভুইল্লা যাই । রবিবার মিটিং ছিলো , বাড়ির পাশে । ভুইল্লা গেসি । খাইয়া ভুইল্লা গিয়া দুই বার খাই । আবার কুনো দিন পেটে ছুচা নাচলে মনে পড়ে , অহ , রাইত নয়ডা বাজে । গত ২৪ ঘন্টায় কিছুই খাই নাই । রাতে ঘুমাইতেও ভুইল্লা যাইতেসি । বহুত বিছড়াইয়া মনেই করতে পার্লাম না । শেষ কালে কুটি বইনে ফুনে মনে করাইয়া দিলো , সকাল বেলা হাত পুইড়া গেসে । তাই এত ব্যথা , এত শোক , খাইতে মন চাইলো কোক। ছুডো বেলায় একবার ইস্তিরি দিয়া হাত পুইড়া গেসিলো । আমি ছুডো বেলা থেকেই অনেক বড় কবি । তাই থাকিতাম হইয়া উদাসী বনের পাখি । আর ভুইল্লা যাইতাম কুনডা ডাইন হাত আর কুনটা বাম । ইয়ে থি মেরা গাম । এক ছোটাসা বদনাম । তো এক হাতে ইঞ্চি তিনেক পুড়ার পরে সুবিধা হইলো । পুড়া দেইখা বুঝতাম পানি খামু নাকি পানি নিমু । এই বারও আমি খুব আশাবাদি । শোককে শক্তিতে পরিনত কইরালাইসি । জাগরনের কথা বন্ধুদের কাছে কইতে যাতে ভুইল্লা না যাই , তাই ঠিক করসি , যতবার ব্যথা পামু, ততবার একটা কইরা মেইল করুম। আপিসের ফুন দিয়া ফুনামু । আর দেখা হইলে , "জাগো ও ও ও ও ও ও ও ও " কইয়া ক্যাঁক কইরা ধরুম। পোড়া হাতে মলম আর লাগাইলাম না । যৌবনের স্বামী , থুক্কু, স্ত্রী আমারে যতই পোড়াক, আর যতই ব্যথা দিক , আমার আছে আয়োডিন বুদ্দি , তাই চোখে জল , মুখে হাসি । বাংলাদেশ ভালোবাসি ।

হয়ত কেউ নেই আশে পাশে , তবু কোথা থেকে আলো আসে?

কি বলবো ? আমি ভাষা হারিয়েছি । বার বার সিডার আক্রান্ত মানুষের খবর পড়ছি । ছবি দেখছি আর ডুবে যাচ্ছি । তীব্র অপরাধ বোধে ডুবে যাচ্ছি । প্রচন্ড শক্ত মানুষ হতে হয় যারা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করে তাদের। তারপর ও দরকার হয় মানসিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য । কারন এই পরিবেশ , এই ধ্বংস যজ্ঞ , এই মৃত্যুপুরী - সহ্য করা প্রায় অসম্ভব। নিজেকে রোবট বানিয়ে ফেলার পরেও খুব একটা কাজ হচ্ছে না । যারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তর্ক করছেন । যারা একে অপরের পেছনে লেগে আছেন। যারা তত্ত্ব এবং তথ্য নিয়ে আঁতলামি করছেন , তাদেরকে বলি, যান। একবার গিয়ে ঘুরে আসুন সিডরের ঘায়ে তছনছ হয়ে যাওয়া জনপদ গুলো ।অনেক ব্যক্তিগত আক্রোশ , অনেক ব্যক্তিগত কষ্ট , অনেক ব্যক্তিগত আক্ষেপ ফিকে হয়ে যাবে । গৌণ হয়ে যাবে প্রেমের প্রত্যাখান , অফিসের প্রমোশন না পাওয়া কিংবা বাজারের ফর্দ । জীবনের অনেক কিছুর মানে খুঁজে পাবেন হয়ত ।আবার অনেক কিছুই অর্থহীন হয়ে যাবে । প্লিজ যান, একটা বার ঘুরে আসুন । আমি জানি টিভি ছবি দেখাচ্ছে , পেপার ছবিসহ মানুষের কথা বলছে - তারপর ও - নিজের চোখে , নিজে উপস্থিত থেকে না দেখলে বুঝবেন না - কি কষ্ট , কি কষ্ট ! ৯১ এর ঘুর্নিঝড়ের পরে আব্বু রিলিফ নিয়ে গিয়েছিলো চট্টগ্রাম । যা দেখেছিল তার কোন বর্ননা আমরা আজো তার মুখ থেকে বের করতে পারিনি ।শুধু মনে আছে , ফিরে আসার পর দুই দিন মুখে কোন খাবার রোচেনি তার ।অথচ মানুষটা ৭১ এর ৯টা মাস লাশ আর হত্যা আর লুটপাট - সবই দেখে এসেছেন । ডাকাতের মত শক্ত হৃদয় মানুষটাকেও নিঃস্তব্ধ করে দিয়েছিলো ৯১ । কিছু বলতে পারছি না ।কিছু বলার নেই । যারা পারেন , তারা নিজের চোখেই দেখে আসুন। আমার ভাষা নেই । আমার চোখ শুকিয়েছে । আমারে শুধু দুইটা হাত আছে । আমি তাই নিয়ে চেষ্টা করে যাবো । আর আপনি ?

একটা সমন্বিত তথ্য ঘর কেন পাই না ? (সিডার)

সকালে এসে অফিসের সেকেন্ড ইন কমান্ডের কাছ থেকে আপডেট পেলাম । সিডোরের ত্রান কাজে গতকাল পর্যন্ত কি হয়েছে , তাই জানালো । সংখ্যা গুলোর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। সরকারী হিসেবে আক্রান্ত মানুষ, অনাথ শিশু , মৃত গবাদি পশু আর নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলের হিসাব । সাথে কোথায় কি বিতরন হয়েছে তার বর্ননা । আর ও কি কি লাগবে , কতদিনের জন্য , তার একটা দ্রুত করা অংক । একবার ভাবলাম , ব্লগে দেব নাকি আপডেট গুলো? মানুষ কি উৎসাহিত হবে জেনে তাদের পাঠানো টাকা গুলো কোথায় যাচ্ছে ! আবার মনে হলো , নাহ । মানুষ অর্ধেক কথা বোঝে না আর বাকি অর্ধেক ভুল বোঝে । যা আমি লিখবো উৎসাহ দেওয়ার জন্য , অথবা , স্রেফ জানানোর জন্য - তা হয়ে যাবে বিজ্ঞাপনী প্রচার । বাদ দিলাম । শুধু মাথার ভিতর দপ দপ করছে কয়েকটা তথ্য । আক্রান্ত সকল মানুষের অর্ধেক শিশু আর তাদের ভিতর ৫ বছরের নিচে শিশুর সংখ্যা ৬ লাখ। ঠিক কত জন শিশু এক বা দুই জন অভিভাবকই হারিয়েছে তার সঠিক সংখ্যা এখনো জানা যায় নাই , কিন্তু সেইটা বৃহত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এই সব শিশুরা শুধু অনাহার , আশ্রয়হীনতা কিংবা রোগের ঝুঁকির ( মহামারী আকারে ডায়রিয়া , কলেরা ইত্যাদি) ভিতরেই নেই - অরক্ষিত অবস্থায় তারা শিশুশ্রম , পাচার কিংবা শারীরীক মানসিক নির্যাতনের শিকারও হতে পারে । যেই শিশুরা অনাথ হয়ে গেলো , তাদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী সাহায্যের দরকার হবে। শুধু খাবার, পানি , ওষুধ দিয়ে তাদের বাঁচিয়ে রাখাটাই তো যথেষ্ট নয়। তাদের জন্য নতুন পরিবার চাই , চাই নতুন বাবা মা। চাই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা । অনেক লম্বা সময় ধরে পুনর্বাসনের কাজ চালাতে হবে । আমরা কয় জন এই বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারছি? সরকারী হিসেবেই দক্ষিণাঞ্চলের এলাকা ভেদে ৯৫% ফসল নষ্ট হয়ে গেছে । সরকারী গুদামজাত খাদ্যের মেয়াদ হলো ২০০৮ সালের মার্চ পর্যন্ত । কিন্তু , পরবর্তী ফসল মে মাসের আগে ঘরে উঠবে না । পাক্কা দুই মাসের বিশাল গ্যাপ ডিমান্ড এবং সাপ্লাই এ। ঝুঁকিপুর্ন গোষ্ঠীর জন্য খাদ্য সরবরাহের কাজ শুরু করবে সরকার ডিসেম্বর মাস থেকে । কিন্তু আসলেই কতজনকে এই ভাবে বসিয়ে খাওয়াবে সরকার? ক্ষেতের ফসল নেই। হালের বলদ নেই ।মাথা গোঁজার ঘর নেই।হাতে কোন পুঁজি নেই ।বীজ ধান নেই । কেউ কেউ সম্পুর্ন পরিবার হারিয়েছেন । কি করে পূনর্বাসিত হবে এই মানুষ গুলো ? এই ম্যাসিভ আকারের কাজ করার জন্য কতটা যুথবদ্ধ হতে হবে আমাদের ? কারো কোন ধারনা আছে ? ৫০ লক্ষ মানুষকে খাওয়াতে হবে, পরাতে হবে , নতুন করে উপার্জনের পথ করে দিতে হবে। আপনারা এখনো কি নিয়ে ব্যস্ত বন্ধুরা ? কারো চশমা ? কারো লুঙ্গি ? খুব গুরুত্বপূর্ন জিনিস বোধ হয় । ৫০ লক্ষ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ন । ব্লগে কম্পু জিনিয়াস অনেক আছেন জেনেছি । ত্রান কাজে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে সমন্বয়হীনতার । কেউ কারো খোঁজ রাখতে পারছেন না । কোথাও একাধিক বার ত্রান বিতরন হচ্ছে । কোথাও একেবারেই পৌঁছাচ্ছে না । আচ্ছা , সারা দেশ এবং বিদেশ থেকে কে কোথায় কি করছে , এই তথ্য গুলো একটা মাত্র ওয়েব সাইটে ঢুকানো যায় না রে ভাই? মানে , একটা নির্দিষ্ট লিংকে ক্লিক করলাম, জেনে গেলাম কোথায় কোথায় কি কি সাহায্য লাগবে। কতটা গেছে । আরও কতটা চাই । আমার সংস্থা কোথায় কি পাঠালো তার একটা আপডেট নিজ দায়িত্বে দিয়ে এলাম । এমন কিছু কি করা যায়? সামহোয়ার ইন কর্তৃপক্ষ , এই উদ্যোগটা নেবেন? একটা কমন প্লাটফর্ম । যে কেউ এসে তাদের ত্রান কাজের আপডেট দিয়ে যেতে পারে । যে কেউ এসে জেনে যেতে পারে । সমস্ত লিংক গুলো এক জায়গায় থাকতে পারে । মানে একটা "ইনফরমেশন সেন্ট্রাল হাব" এর মত । বুঝাই তো যাচ্ছে , অন্তত মে মাস পর্যন্ত ত্রান কাজ চলবে । করতে পারলে এইটা একটা খুব গুরুত্বপূর্ন রিসোর্স হবে সকলের জন্য । লিংকের প্রচারের কাজটা করতে পারবো । দেশী, বিদেশী , সরকারী , বেসরকারী বিভিন্ন গ্রুপে এই " হাব " এর খবর এবং লিংক পাঠানোর দায়িত্ব সম্মিলিত ভাবেই নিতে পারি । আপনারা এই ধরনের ডাটা ব্যাংক বানানোর একটা উদ্যোগ কি নেবেন? ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কমিটির ওয়েব সাইট থাকতে পারে । কিন্তু , সেটা ইন্টার এক্টিভ হওয়ার কোন সম্ভাবনা দেখি না । কারো মাথায় কিছু এসে থাকলে একটু শেয়ার করেন। [সিডারের কাজ করতে করতে মন মেজাজ কিছুতেই ভালো রাখতে পারছি না । লেখাটা পড়ে কারো খারাপ লাগলে দুইটা গালি দিয়ে মাফ করে দিয়েন । ]

বেশি ভিতরে ঢুকো না ( সাবধান, বিব্রতকর কথা আছে)

এই মহান বানীটি কে কবে কাকে প্রথম দিয়েছিলো , জানি না । তবে এই বানীটি যে মহান এতে কোন সন্দেহ নাই ।

কলেজে এক প্রেমিক জুটি ছিলো; দিন নাই, রাত নাই , খালি মেয়েদের ( আমিও সেই দলে) পিছনে লাগে । মাথায় কাপড় দাও না কেন ? বোরখা পড়া ছেড়ে দিলা কেন ? ছেলেদের সাথে এত হেসে হেসে কথা বলো কেন? নামায পড়ো না কেন? কার ওড়না কত লম্বা , কার বউ সবার সামনে স্বামীর হাত ধরেছে ! সবার মাথাটাই খারাপ করে দেয় আর কি ! তারা হইলো যাকে বলে টিপিকাল সুশীল সমাজের প্রতিনিধি , বুদ্ধিজীবী মেডিকেল স্টুডেন্ট । তো , ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষায় মেয়ে ফেল করলো । আমার প্রিয় বান্ধবী না হইলেও , একটা ভালো স্টুডেন্ট হুট করে ফেল করলে খারাপই লাগে । তব্ধা খাইলাম, বুঝলাম না কিছুই । হঠাত ফেল করলো কেন? মাইয়া কয় শরীর খারাপ। সত্য কখনো চাপা থাকে না । যেই ক্লিনিকে গর্ভপাত ঘটিয়েছিলেন এই মহিয়সী এবং তার সুশীল প্রেমিক , সেই ক্লিনিকেই একেবারে পড়বি পড় মালির ঘাড়ে , আমারই বন্ধুর সাথে দেখা এবং পালাতে গিয়ে ধরা খাওয়া । আমি অবাক হয়ে বন্ধুরে কইলাম , তাহলে আমাদের এত সমালোচনা করে , এত উপদেশ দিয়ে বেড়ালো যেই সুশীল , ধর্মপরায়ন প্রেমিক জুটি , তারা নিজেরা বিবাহের পূর্বেই এত সব কান্ড ঘটিয়ে ফেললো ? প্রিম্যারিটাল সেক্স আর একটা প্রান হত্যা তাইলে নামায না পড়ার চেয়ে কম খারাপ ? বন্ধু খালি হেসে বললো , "বেশি ভিতরে ঢুকো না।" আমি মাথা চুল্কাই । "কারে কইলা ?" দুস্ত কয় , তোমারে আর ঐ প্রেমিক -দুইটারেই !

তখনো পাশ করি নাই । পরিচয় হইলো এক বিদেশীর সাথে । ব্যাটা আমার ক্লাস প্রেজেন্টেশন দেখে পুরা পাংখা । সবার সাথে সেও প্রশংসায় পঞ্চমুখ । ইউনিসেফ এর ইয়া বড় কর্ম কর্তা । কার্ড দিয়া , ইন্টারভিউ এর জন্য ডাকলো । আমি তো আর নাই! লাখ টাকা বেতনের চাকুরী হেটে হেটে নিজে থেকে ধরা দিচ্ছে ! স্বপ্ন না মরীচীকা ! ইন্টারভিউতে আমি উত্তর দিবো কি, সে নিজেই আমি কত ভালো , কত বুদ্ধিমতী , কত সম্ভাবনাময় , ইনোভেটিভ ইত্যাদি ইত্যাদি বলে কুল পায় না। (দুনিয়াতে খুব কম বিষয়ে জানি। তবে নিজের বিষয়টা বোধ হয় খারাপ জানি না) কথা গুলা শিক্ষকদের মুখ থেকেও সারা বছর শোনার সৌভাগ্য হয়েছিলো বলে আমি তখনো সন্দেহ করতে পারিনি - আসলে কি ব্যাপার ! চাকরী আমার নিশ্চিত প্রায় , প্রথমে ছোট খাট প্রজেক্ট দিয়ে শুরু হবে । তারপর পার্মানেন্ট । তো কাজের অভিজ্ঞতা লাভের জন্য আমি আগামী সপ্তাহান্তে তার সাথে রাজেন্দ্রপুর সি ডি এম -এ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্কশপে যোগ দিতে পারবো কিনা । দুই দিন থাকতে হবে । পাক্কা দশ মিনিট আমার মাথাতে ঢুকেই নাই আসলে কি চাওয়া হচ্ছে ( আমি চরম গাধা নাকি বেশি অনভিজ্ঞ ছিলাম- এইটা এখন মনে হয় ) । আমি আরো বসে বসে চিন্তা ভাবনা করছি , ক্লাস আছে কিনা, পরীক্ষা আছে কিনা -- ভাবতে ভাবতে হঠাতই মাথায় দিমাগ কি বাত্তি জ্বলে গেলো । দ্রুত কথা শেষ করে বেরিয়ে এলাম। বের হতে না হতেই এক জিগিরী বান্ধবী অতি উতসাহে ফুন দিলো , " কি রে , কবে খাওয়াবি ?" অপমানে চোখ দিয়ে টপ টপ কইরা পানি গড়াইতাসে , তাও হাসতে হাসতে কইলাম, "লাখ টাকায় নিজেরে বিক্রি করার স্কিলটা এখনো শিখতে পারি নাই ।" বান্ধবী জিগাইলো , তাইলে "----" আপা চাকরী করে কেমনে ? আমি কইলাম , "বেশি ভিতরে ঢুকো না।"

প্রথম চাকরীটা করতাম একটা স্কুলে । বেতন তেমন বেশি না । কারো কারো ছুটি নিয়ে বিদেশ বেড়ানো আর হীরার আংটি , লেটেস্ট পারফিউম , গুচির ব্যাগ - কিছুতেই হিসাব মেলাতে পারতাম না। আমি সকালে চাকরী করি , বিকালে ক্লিনিক , তাও শালার হিল্লী দিল্লী করার কথা চিন্তাই করতে পারি না তখনো । বান্ধবীর বিয়ে হইলো ব্যাংকারের সাথে । তার স্বামীর অফিসেও দুই এক পিস এই রকম আছে । হিসাব মিলাই দিলো বান্ধবী। বসের সাথে পার ট্রিপ - এক সুটকেস কাপড় আর ক্যাশ টাকা । এখন আয়ের সাথে ব্যয়ের তুমুল অসঙ্গতিআলা কাউকে দেখলেই মনে হয় , " ইমন , চুপ! বেশি ভিতরে ঢুকো না।"

ছেলেটা মোবাইল বিশারদ । ল্যাভিশ লাইফ লিড করে ।গাড়ি, বিদেশ ভ্রমন , বান্ধবী ইয়ত্তা নাই । কোথায় পায় এত টাকা ? নতুন সেট কিনবো বলে তার সেটটা দেখার জন্য নিলাম । বেশ দামী সেটটার ভাও বুঝতে একটু সময় নিচ্ছিলাম । হঠাত কুতুব ফিস ফিস করে উঠলো , " আপি , প্লিজ , বেশি ভিতরে ঢুকো না ।" বদ্দার ডায়লগ ঝেড়ে দিলাম, " কি রাখছিস ? শরমের ছবি না গরমের?" মামুর হাসিতে যা বুঝার বুঝে নিলাম । ক্যামেরাটা ৫ মেগাপিক্সেল।

কর্পোরেট দুনিয়া । মাল্টি ন্যাশনাল দুনিয়া । দেশী বিদেশী ব্যাংক । মিডিয়া ওয়ার্ল্ড । ছিটে ফোটা ঘুরে বেড়ানো । কোথাও বন্ধু , কোথাও আত্মীয় । আমি মোটামুটি দুরেই থাকি । তাও কাজের সূত্রে বা বন্ধুদের মুখে জানতে পারি নানান কাহিনী । এইচ আই ভি প্রোগ্রাম গোপন প্রকাশিত , পরিচিত , পরিচয়হীন অনেক মানুষের কথা বলে দেয় । ডিজিএফাই এ ক্লাস মেট চাকরী করে । শুনি রঙ্গিলা সব ঘটনা ।

মানুষ বদলে গেছে ভীষন ভাবে । আমার প্রজন্মের ছেলে মেয়ে গুলোকেই আমি চিনতে পারি না । যাদের বয়স এখন ২৫ থেকে ৩০+ । কি এক সর্বগ্রাসী ক্ষুধা তাদের ভিতর । পেতেই হবে । সব কিছু পেতে হবে । সবাইকেই পেতে হবে । যে কোন মূল্যে । মানি , মাদক , মেয়েমানুষ - তিন এম এর পিছনে ছুট ছুট ছুট । মেয়েরাও পিছিয়ে নেই । সবাইকে পেছনে ফেলে সামনে যাওয়ার জন্য অনেক মাশুল গুনতে রাজি ।

বাংলাদেশে কি সার্ভাইভাল এতই কঠিন হয়ে গেছে ? কোন নীতি মেনে আর জীবন ধারন সম্ভব নয় ? নাকি আমাদের লোভ বেড়ে গেছে ? মানুষ নই আর , হয়ে গেছি কঞ্জিউমার ? পুঁজি অবশ্য বাজার খোঁজে । আর ক্রেতা । মানুষ তার দরকার নেই ।

মানুষে মানুষে সম্পর্ক তৈরী করাটাও এখন পুঁজিবাদী ভীষন ।

আমার বন্ধু আমার প্রোফাইল নেম দিয়েছে ।পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট গাধা ।

কেন? কারন আমার নাকি রাসূলের সময় জন্ম নেওয়া উচিত ছিলো । ওই যে, যখন সবাই সদা সত্য কথা বলিত । আমি মানতে পারলাম না । গাধা বলেছে আপত্তি নাই । হতেই পারি । কিন্তু , রাসূলের সময়ের মত কঠিন বিধি নিষেধ মেনে চলবে সবাই - এইটা তো আমি জীবনেও আশা করি না । কে বোরখা পরবে , আর কে ফ্রি সেক্স করে বেড়াবে - আমার তাই নিয়ে সামান্যতম চিন্তা নাই । যার যেই ভাবে বাঁচতে ইচ্ছা করে , বাঁচুক । ব্যক্তিগত ভালো মন্দ, পছন্দ -অপছন্দ মানুষের একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার । আমি কি আল্লাহ নাকি ? আমি কেন বিচার করতে যাবো ? আমি শুধু বন্ধুকে এইটুকুই বলছিলাম, আমি চাই মানুষ সত্য কথা বলুক । তুমি যা , নিজেকে সৎ ভাবে সেইটাই প্রকাশ করো । তার পরে আমার সাথে তোমার আকাশ পাতাল তফাত থাকলেও আমার কোন সমস্যা থাকবে না । তুমি সমকামী না চার্চের হেড নান , তাতে আমার কিছু যায় আসে না । তোমার বিশ্বাস তোমার কাছে । আমার বিশ্বাস আমার কাছে । আমরা বন্ধু হতেই পারি । এই টুকু চাওয়াতেই , " সর্বোৎকৃষ্ট গাধা " উপাধি পেয়ে গেলাম। আর বন্ধু ১ লক্ষ ১ বারের মত মনে করিয়ে দিলো , আমি রাগ ইমন এই দুনিয়ার জন্য ফিট না । জিগাইলাম, "তাহলে অনুমতি দাও, বিদায় নিয়ে অন্য দুনিয়ায় চলে যাই? " রাস্কেলটা এখনো জবাব দেয় নাই ।

আইরিনের বিবাহ সংক্রান্ত পোস্ট পড়ে একটা ঘটনা মনে পড়ে গেলো । বায়োডাটা দেখা হয়েছে । আব্বু আম্মু যথারীতি ছেলের পড়া লেখা , পরিবার , কাজ কর্ম , সামাজিক - অর্থনৈতিক অবস্থানের খোঁজ নিলেন । "মানুষ কেমন " দেখার দায়িত্ব পড়লো আমার উপর । কথা বলে মনে হলো, পারফেক্ট । কোথাও কোন দাগ খুঁজে পাওয়া যাবে না । কিন্তু , ততদিনে গাধার গোবর ভরা মাথাতেও কিছু ঘাস গজিয়েছে । ফলে মাথায় কিছু অক্সিজেন ও বহিতেছে । আমি আমার মত করে খোঁজ নিলাম । স্কুলে ও হাসপাতালে চাকুরী করার সুবিধা হলো , চোখের সামনে দেখেছি ক্লাসের ফার্স্ট বয় , পারফেক্ট অল রাউন্ডার ছেলেদের " অফ দা রেকর্ড" লাইফ এর কান্ড কীর্তি । এই গুলা কাহিনী তাদের পরিবার পর্যন্ত পৌঁছায় না । আম্মু চিল্লা পাল্লা করে জানতে চাইছে , " এই ছেলেটাকে বিয়ে করতে তোমার সমস্যাটা কোথায় ? খারাপ কি দেখলা ? " কি করে বলবো মাকে , আমার প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা কি করে বেড়ায় ! যা জানি , মুখ ফুটে বলতে পারলাম না । আম্মা সহ্য করতে পারবে না । স্রেফ বললাম , " বেশি ভিতরে ঢুকো না।"

মানসিক শান্তি বজায় রাখার কোন উপায় বুঝি আজকাল বাকি নেই । কানে তুলো , পিঠে কুলো দিয়ে গাধা হয়ে সারাদিন ঝিমাও । সি নো ইভিল। হিয়ার নো ইভিল । আর হ্যাঁ , বেশি ভিতরে ঢুকো না ।

দুঃসময় খামচে দিলে

যেভাবে সংখ্যা পেরিয়ে
শূন্যের দিকে যাওয়া যায়
সেভাবেই যেতে চাই
স্লেট থেকে সব মহৎ অংক মুছে ফেলে
কোন নদীর দিকে যেতে চাই !

তীব্র অপরাধ বোধে সারা রাত নির্ঘুম কেটে গেলো । বরিশাল যাওয়ার বিনা মেঘে বজ্রপাত ধরনের নির্দেশ এসেছিলো । স্রেফ ৫ মিনিটের নোটিশে সিদ্ধান্ত নিতে হবে , যেতে হবে রাতের ভিতর । কিন্তু যাওয়া হলো না। অথচ এই যাওয়ার জন্যই অপেক্ষা করে আছি ক'দিন ধরে । সারা বিকাল ছটফট করতে হলো অক্ষম হাত দুটোতে মোবাইল জড়িয়ে ধরে , অন্য কাউকে খুঁজে । পেলাম , শারমিন যাচ্ছে আমার জায়গায়। আমার যেতে আপত্তি ছিলো না । কিন্তু অসুস্থ ৭৪ বছরের পিতাকে সম্পূর্ণ একলা রেখে বরিশাল চলে যাওয়াটা আরেক অমানবিক কাজ হতো । তাকে এক বেলা একা রাখা যায় । তা'বলে সাত দিন? অসম্ভব । এক্সিডেন্টের পরে হাসপাতালে থাকা গেলো না , ব্যথা নিয়েই অফিস -বাসার দায় দায়িত্ব স্বীকার করে উঠে দাঁড়াতে হলো , হাঁটতে হলো হাসিমুখে (কিচ্ছু হয়নি , হাঁটতে পারবো , নো প্রবলেম) - তখনো এতটা খারাপ লাগেনি । নিজের শরীরটাকে কেটে ছিড়ে পুড়িয়ে ভাগাড়ে ফেলে রাখতে আমি ওস্তাদ । ব্যথা এত সয়েছি , এখন আর কষ্টকে কষ্ট মনে হয় না । মনে হয় স্মৃতি রোমন্থন। শরীর সয়ে গেছে আমার । কিন্তু এই মানসিক যন্ত্রনা থেকে বের হতে পারছি না । কত গুলো শিশুমুখ আমাকে বার বার ডাকছে । আমার কি ওদের প্রতি দায়িত্ব ছিলো না? উফ, এই সময়টাই কেনো একলা আমি। এত এত একলা । কেউ নাই , আমি ছাড়া , কোথাও কেউ নেই । সমস্ত দায় ভার , অক্ষম কাঁধে আবার!

জলের মত জটিল ছিলো দিন
জলের মত গড়িয়ে গেলো জলে
চোখের জলে বেড়েই ছিলো ঋণ
ছোঁয়নি যখন তোমার করতলে !

বাধ্য হয়েই পেপার পড়তে হচ্ছে আবার । দেশটাকে বিষাক্ত অর্গলে দমবন্ধ হতে দেখছি প্রতিনিয়ত। দেখতে ইচ্ছে করছে না। চোখ বন্ধ করে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের বাইরে ভাবতে ইচ্ছে করছে না । কষ্ট হচ্ছে খুব । কিন্তু চাইলেই কি অন্ধ হওয়া যায়? চাইলেই কি এড়ানো যায় প্রলয়? রাজনীতি , অর্থনীতি , সমাজ সংস্কৃতি - সকল অঙ্গনে চলছে সাদা চুনকাম। তবে তাতে ভন্ডামি এত বেশি যে মুখে চুন লাগিয়ে কাম কেলী ছাড়া আর কিছু হচ্ছে বলে তো মনে হয় না । সামরিক ধর্ষনজাত জারজ গণতন্ত্র শেষকালে কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না । জন্মনিয়ন্ত্রনের মত দুর্নীতি নিয়ন্ত্রনের প্রাকৃতিক পদ্ধতি শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের পরিবার পরিকল্পনা করে ছেড়েছে । বাস্তব জ্ঞান না থাকলে যা হয় । পরীদের কল্পনা করেই কাটাতে হচ্ছে । বাস্তবের পরিবার লোপাট ! দেশ চালানো আর যুদ্ধক্ষেত্র কি এক? নিয়ন্ত্রন আর নিয়মকানুন দরকার আছে । দরকার শাস্তি ব্যবস্থা ও । কিন্তু টুপিধারী দাড়াল আর তাদের বৈদেশী নাগরদের পদলেহন করে প্রলয় ঠেকানো যাবে না । যাবে না কারন ১৪ কোটি ভুখা পেট খাবার ছাড়া আর কোন নিয়ম মানবে না । বাজারে গেলে দমবন্ধ হয়ে আসছে ।

শহর ছেড়ে চলো এবার চলো গাঁয়ে
গাঁয়ের শুরু তোমার পায়ে পায়ে ।

স্বাধীনতা যুদ্ধে আপাত জিতে যাওয়ার পরে আমরা গ্রাম ভুলে থেকেছি । করেছি ঢাকার উন্নয়ন। আর শিয়ালে শকুনে দখল করে নিয়েছে গ্রাম। আমাদের অবহেলা এবার চারিদিক থেকে গিলে খাবে আমাদের । আত্মধ্বংসী এই প্রক্রিয়াটিকে বিপরীত মুখী না করতে পারলে আর একতা আশা করে লাভ নেই । বহুবার প্রতারিত করেছি আমরা সবুজ বাংলাকে । আজ সেই সবুজ নিয়েছে সামরিক আর জঙ্গী উর্দির জমিনে আশ্রয় । আমার নিজের দোষ । শোধরানোর পথ খুঁজছি ।

কবে শেষ হবে
এই সব মোটামুটি মরে বেঁচে থাকা?
অসময় খামচে দিলে
উড়বে কি স্বপ্নের ভীরু পাখা?

ব্লগের ডাঃ আইজুদ্দির জন্য উপহার

লিংকুপ্রচন্ড মজা পেয়েছি লেখাটা পড়ে ।এই বিষয়ে অনেক দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিলো ব্লগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি এবং নৃতাত্ত্বিক 'অন্যমনস্ক শরৎ' এর সাথে । শরতের সাথে আলোচনাটা জমেছিলো কারন সেইখানে শুধু দর্শন নয়, তথ্য এবং ধারনা এসেছিলো মানবের ইতিহাস, কবিতার ইতিহাস, কবিদের ইতিহাস এবং বিবর্তনের বিভিন্ন উপাত্ত থেকে। শরত একাধারে কবি, মানব গবেষক এবং বিজ্ঞানের একনিষ্ঠ পাঠক বলেই হয়ত আলোচনাটা একটা গ্রহনযোগ্য ব্যপ্তি পেয়েছিলো। আলোচনায় ব্লগের আরো অনেকেই ছিলেন যারা কবিতা লেখেন এবং ভালোবাসেন। তখনও এই গবেষনার ফল বের হয়নি । অথচ , আমরা দুই জনেই এই ধরনের একটা আশংকা করেছিলাম কবিদের নিয়ে। লেখাটা পড়ুন। আর চিন্তা করে দেখুন কবিতা আর লিখবেন কি না ! কবি, কবিতা এবং মৃত্যু নিয়ে একটা লেখা মাথায় ঘুরছে ক'দিন থেকে । সেই নিয়ে সামান্য 'হোম ওয়ার্ক' করতে গিয়ে এই গবেষনাটা পেলাম। হাসতে হাসতে শেষ । এর চেয়ে ভালো কোন উপহার ডাঃ আইজুদ্দির জন্য হতে পারে না । রাগ ইমনকে মনের সুখে জ্বালাতন করার জন্য ,এবং , ব্লগের কবিদের রগড়ানোর জন্য ইদানিং বেচারা আইজুদ্দির অস্ত্র কমে যাচ্ছিলো । দিলাম তুলে শিয়ালের হাতে মুরগি । কবিতাপ্রেমীরা এই ধরনের গর্হিত কাজের জন্য আমাকে দলে দলে এক দিয়া যান । নূরে আলাম ভাইকে হারাতেই হবে!

সুযোগের অপেক্ষায় থাকে বিষ

অন্তরে বিষ মেখে থাকি অন্তরীন
আমার চেতনায় বাজে কাল কেউটের বীন
আমাকে চেনো নাই ? তোমাদের বিলাসী মন
অদ্ভুত নিরবতায় ভুলে জল ও মাটির ঋণ !

ভিতরে খুঁড়ে দেখো , অচল পয়সার মত
আমিও নাব্য বেদেনী , বয়ে বেড়াই ক্ষত
নিয়তির টুঁটি চেপে ডাঙ্গায় নেবেছি একা
বুকের বাক্স পেঁচিয়ে উলঙ্গ , প্রতারিত ।

এই দুই কুড়ি এক গন্ডার ডিঙা সেঁচে
দু মুঠো ভাত, কলমী, মরিচে বেঁচে
বেশ থাকি চাওয়ার তেমন আর কি
নিবু নিবু কুপির ভিতরে জীবন সেঁচে ।

গন্ডগোলের বছর গেলো বাপ আর ভাই
বোনটা ছিড়ে খেলে আর কোন কুল নাই
ভোটে বা বিচারে বাইদা ডাকে না কেউ
কি জিতে আর হারে , আমি কার খাই ?


তাও কেউ যদি কয় রক্ত গাঙে বয়নি
এই দেশে কেউ লাশের গন্ধ সয়নি
বাক্সে বাক্সে আমার সাপেরা তড়পায়
কাটবো ঠিকই , এখনো সময় হয়নি ।

আইরিন শুনো

আইরিন শুনো ,
আজকে যদি তোমার ৯ রকমের সমস্যা
১৮ রকমের পড়া , আর ,
৩৬ রকমের পরীক্ষা না থাকে -
আমার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথে হাঁটবে ?

আমার আজকে ৩৬ রকমের কাজ ফেলে
১৮ রকমের দায় দায়িত্ব ভুলে
৯ রকমের কষ্টকে সিন্দুকে তুলে
স্রেফ তোমার সাথে হাঁটতে ইচ্ছে হলে
তুমি কি আমার এই ইচ্ছের ফিতে টুকু কাটবে?