বিচার
রশীদ সাহেব উকিল হিসেবে আগুন ঝরিয়েছেন , সে অনেক কাল আগের কথা । এখন তার দেখানো পথে নতুন চ্যাংড়া “উকিলেট”রা আলো ঝরায় কোর্টের অলি গলিতে ।খোলা আগুন নিষিদ্ধ আছে , বোমাবাজির পরের দিন গুলাতে ।সতীর্থদের নিয়ে হাসাহাসি করেন রশীদ সাহেব। মোবাইলের লাইট ছাড়া এই চ্যাংড়া গুলোর ভিতরে তিনি কোন দেশ বদলে ফেলা আগুন পান না । রশীদ সাহেবের তত্তাবধানে কাজ করার সৌভাগ্য তাই কোন উকিলেটের সহজে হয় না। নিজের কতগুলো নীতি রশীদ সাহেব ভীষন ভাবে পালন করেন ।সেই নীতি গুলো আজকালকার খুব কম ছেলে মেয়ে মেনে নিতে পারে । অতি দ্রুত নাম এবং টাকা কামানোর এই বেসাতির যুগে রশীদ সাহেবের মত মানুষ গুলো কমে গেছে । পরিবারকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া অথবা তাদের কারনে অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে হতে পারে বলে রশীদ সাহেব বিয়েই করেননি ।
তার নারী আসক্তি নেই । তিনি নারী বিদ্বেষী নন তবে নারীকে মানুষের উপরে কোন মর্যাদা দিতে তিনি নারাজ। সবার জন্য আইন সমান হলে নারীকে “মা” কিংবা “দেবী” রূপে পূজা করার মধ্যে তিনি কোন মাহাত্ম্য দেখেন না ।যদিও বাজারে “প্রত্যাখ্যাত হইয়া নারীদের প্রতি বিরূপ “ গল্প চালু করার চেষ্টা আছে তার প্রতিপক্ষ উকিলদের , রশীদ সাহেব এই সব গুজব নিয়ে বিচলিত হন না । বন্ধুদের মত শেষ জীবনে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা রক্ষা করার জন্য রাজনীতিতে তিনি নামবেন না ।আর তাই , বাজারে নারী ঘটিত সুনাম বজায় রাখার দায় নেই। তবে এই ধরনের বদনাম নাকি রাজনীতিকদের এসেন্সিয়াল ক্রাইটেরিয়া হিসেবে মাজা'র জোরের প্রমান দেয় । পৃথিবী কি এতটাই বদলে গেছে ?
সামনের ফাইলটা ঘাটতে ঘাটতে রশীদ সাহেবের ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসির রেখা ফুটে ওঠে । কেউ জানুক আর না জানুক, তিনি খুব ভালো করেই বোঝেন , পৃথিবী এক পাও আগায়নি বা পিছায়নি। টানা ৩৭ বছর আইন ব্যবসা করে তিনি খুব ভালো করেই জানেন , ক্ষমতা ও টাকার কাছাকাছি থাকা সকল ব্যক্তিরই লৈঙ্গিক সততার অভাব আছে এবং অপরাধ করার ক্ষেত্রে নারী পুরুষের চেয়ে এক ইঞ্চিও পিছিয়ে নেই । কোন কোন মহিলার নৃশংসতার গল্প করে রশীদ সাহেব মাঝে মাঝে কোমল মতি তরুন উকিলেটদের রাতের ঘুম নষ্ট করে মজা পান। আবেগ দিয়ে প্রেম হয় , আর বিচার করতে লাগে ঠান্ডা , যুক্তিবাদী মাথা । এই জিনিসটা এই বাচচা ছেলে গুলো যত তাড়াতাড়ি বোঝে , তত মঙ্গল ।
এই কেসটার কথাই ধরা যাক। খুনের কেস। তবে যৌন নির্যাতনের পরে খুন। মোটিভ , ধৃত আসামী , খুনের আলামত , সাক্ষী সাবুদ , সর্বোপরি খুনীর জবানবন্দী পাওয়ার পরে শাস্তি বিধানের ব্যাপারে কোন দ্বিধা থাকতেই পারে না । এত সহজ কেসটা কেন নতুন পুঁচকে ছোড়াটা তাঁর টেবিলে পাঠিয়েছে , রশীদ সাহেব একটু অবাকই হন । অবশ্য এই কেস এর রায় দিতে গিয়ে বন্ধুবর বিচারপতি নাকি বিব্রত বোধ করেছেন ! নইলে এই সব ফালতু কেস নিয়ে রশীদ সাহেব আর আগ্রহ বোধ করেন না । টাকার পরিমান অকল্পনীয় রকমের বেশি হলেও । টাকার ধার তিনি জীবনেও ধারেন নাই । একা একটা মানুষের চাহিদা খুব অল্প । পৈত্রিক বাড়ি , ব্যাংকের এফ ডি আর , বিশ্বস্ত চাকরের হাতে চা আর স্টাডি ভরা বই । রশীদ সাহেব আসলে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশিই ধনী।
কিছুটা কৌতুহল আর বাকিটা তাচ্ছিল্য নিয়ে রশীদ সাহেব ফাইল পড়েন । বিচারপতি ফখ্রুদ্দিন এর “হ্যাডম” সম্পর্কে তিনি বিলক্ষন জানেন । ও ব্যাটা তো সহজে বিব্রত হওয়ার লোক নহে । খুন হয়েছে একটা মেয়ে । বয়স দেখা যাচ্ছে ১৪। জন্মসূত্রে আমেরিকান সিটিজেন । বাবা মাকে নিয়ে নিউইয়র্ক থেকে বেড়াতে এসেছিলো নানাবাড়িতে । গরমের ছুটি কাটিয়ে ফেরার মাত্র দুই দিন আগে নিজের বাড়িতে খুন হয়েছে । ধর্ষনের বা শারীরিক আক্রমনের আলামত পাওয়া গেছে শরীরে । স্তন এবং শরীরের কোমল জায়গা গুলোতে আচড় , কামড়ের চিহ্ন আছে । যোনীপথ ছুরির আঘাতে ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলা হয়েছে । কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, কোন সিমেন পাওয়া যায় নাই । যোনীপথের টিস্যু এমন ভাবে কেটে ফালা ফালা করা হয়েছে যে “ইন্টারকোর্স” হয়েছিলো কি না , ফরেন্সিক রিপোর্টে “ ক্যান নট বি ভেরিফাইড “ লেখা আছে ।
এই সবই হলো মৃতার প্রতি খুনীর ভয়াবহ আক্রোশের প্রমান । প্রচন্ড আক্রোশ ধর্ষন বা খুনের কারন হলে , যৌনাঙ্গ ক্ষত বিক্ষত করা দেহ পাওয়া যায় প্রায় ৯৯% ক্ষেত্রে । “ক্যাস্ট্রেশন “ মহিলা খুনীদেরকেও করতে দেখা যায় আক্রান্ত পুরুষের যৌণাঙ্গে । অনেক ক্ষেত্রেই হয়ত মহিলা সেই পুরুষের হাতে আগে কখনো যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন – এমন ইতিহাসই পাওয়া যাবে । পাতা উলটে সিমেন রহস্যের উত্তর মেলে । খুনী একজন মহিলা । সুতরাং , ইটস এ কেস অফ ম্যালিস । কিন্তু , রশীদ সাহেব চশমা খুলে ঘাম মুছতে শুরু করেন খুনীর নামটা দেখে । ১৪ বছরের কিশোরীর নামের সাথে মিলটা চোখ এড়ায় না ।খুনী মেয়েটির জন্মদাত্রী মা । তার চেয়েও বড় কথা , মহিলাকে রশীদ সাহেব চেনেন । মুক্তা ! এতদিন পরে !
12 comments:
কি ঘটনা ? কমেন্ট করা যাবে না কেন? গুগুল একাউন্ট দিয়ে ঢুকে কমেন্ট করতে হবে । এনোনিমাস কমেন্ট করা যায় না। ঃ)
এইবার মনে হয় কমেন্টস যাইবো...
হিলু.. মাইক্রোফুন টেস্টিং হিলু... ৩...৪...২...৫...
keep going
ameo asay porsi..raag apu..
:D
রাগ ইমন তোমায় শুভ কামনা। দেখে ভাল লাগছে। আমিও ব্লগস্পটেই ব্লগাই নিয়মিত/ তোমায় স্বাগতম/
মাঝে মাঝে ঢু মারা যাবে। :)
লিখে যাও...
অনেক অনেক ধন্যবাদ সবাইকে । আমি আগামী দুই তিন মাস খুব ব্যস্ত থাকবো । ব্লগ স্পটে লেখা সামহোয়ারের মত সহজ লাগলো না। এত্ত ঝামেলা করতে হয় । ২-৩ মাস পরে আবার নিয়মিত হবো । আশা করি ধৈর্য্য ধরে সাথে থাকবেন । ঃ)
:D just saying you a hi!
probably it will take months to find out who i am! :D hahahaha! ei lov ta shamlaite parlam na!
hmmm.. eta khub kharap! amar blogger account diye log in hoy na.. junk gmail er acc diye log korte hoy! :(
Hoping you will continue your writing with dignity…………….
Post a Comment